সাংবাদিক বৈঠকে সনিয়া। ছবি: পিটিআই।
রাহুল গাঁধী বিদেশে। দিল্লি সংঘর্ষের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ইস্তফা চেয়ে সরব হলেন সনিয়া গাঁধী। রাস্তায় নামলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা।
আজ সকালেই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন সনিয়া। নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের নাকের ডগায় গত কয়েক দিন ধরে জ্বলছে রাজধানী দিল্লি। প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ, অথচ সরকার-পুলিশ বসে আছে হাত গুটিয়ে। ঘটনার গুরুত্ব মেপে ‘প্রথম বার’ এআইসিসি-র মঞ্চে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এলেন সনিয়া। কথায় কথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা তো করলেনই, অরবিন্দ কেজরীবালকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন। কিন্তু তাঁর মূল নিশানায় রইলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সনিয়া বললেন, ‘‘দিল্লির ঘটনা পরিকল্পিত চক্রান্ত্র। বিজেপির নেতা প্রকাশ্যে উস্কানি দিচ্ছেন। তা জেনেও কেন্দ্র পদক্ষেপ না করাতেই এত প্রাণ গেল। দিল্লির এই পরিস্থিতির জন্য বিশেষ করে দায়ী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অবিলম্বে তিনি ইস্তফা দিন।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানাতে রবিবার সকালেই আমদবাদে চলে যান অমিত শাহ। আর সে দিন থেকেই দিল্লিতে শুরু হয় সংঘর্ষ। সনিয়া আজ এই প্রশ্নটিও তোলেন: ‘‘রবিবার থেকে কোথায় ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কী করছিলেন? গোয়েন্দা তথ্যের কী হল? কত বাহিনী পাঠানো হয়েছে? দিল্লি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ হারানোর পরে কেন আধাসামরিক বাহিনী গেল না?’’
আরও পড়ুন: ডোভালের সুরক্ষার ‘আশ্বাস’ নিয়ে প্রশ্ন, শুরু বিতর্কও
আজই কংগ্রেস দফতর থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত পদযাত্রার পরিকল্পনা ছিল সনিয়ার নেতৃত্বে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সময় দিলেন আগামিকাল। তবে আজই পথে নামলেন প্রিয়ঙ্কা। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরেই ‘শান্তি মিছিল’ করতে শুরু করেন দিল্লিতে গাঁধী-স্মৃতি পর্যন্ত। তবে ইচ্ছা ছিল অমিত শাহের বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে ইস্তফার দাবি তোলা। দিল্লি পুলিশ আঁচ পেয়ে আটকে দেয় জনপথে। সেখানেই দলবল নিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন ধর্নায়। হাসপাতালেও যেতে চেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা। প্রশাসন অনুমতি দেয়নি।
হাতে কালো ফিতে বেঁধে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রিয়ঙ্কা বললেন, ‘‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি গিয়ে ইস্তফা নিতে চেয়েছিলাম। পুলিশ আটকে দিয়েছে। এই শহরকে ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশে স্বাধীনতা এনেছে কংগ্রেস। গাঁধী-নেহরুর দল। আমরা যেন শান্তি-সম্প্রীতির কথা বলি।’’ সনিয়া-প্রিয়ঙ্কাদের জবাবে আসরে নেমে মোদী সরকারের মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর, রবিশঙ্কর প্রসাদরা বললেন, ‘‘দিল্লি যখন শান্ত হচ্ছে, ক্ষুদ্র রাজনীতি করছেন সনিয়া গাঁধী। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি হাস্যকর। তিনিই পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোথায় ছিলেন— এ আবার কেমন প্রশ্ন? লোকে তো প্রশ্ন করবে ‘রাহুল বাবা’ কোথায়?’’