রবিশঙ্কর প্রসাদ। ফাইল চিত্র।
দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় পরে রাতারাতি বদলি হয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর। তাঁর বদলিকে ‘যথার্থ’ দাবি করে গত কালই টুইট করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। আজ আবার দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনও করলেন তিনি। সরকার যে নিয়ম মেনেই চলছে, তা ‘প্রমাণ’ করতে ওই অনুষ্ঠানে মোদীর পাশাপাশি রাজনাথ সিংহ, নিজের এমনকি প্রয়াত অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজের নামও নিলেন রবিশঙ্কর। কিন্তু এড়িয়ে গেলেন অমিত শাহের নাম।
বিচারপতি বদলি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ দিন রবিশঙ্কর বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে কলেজিয়াম ১২ ফেব্রুয়ারি এই বিচারপতি-সহ আরও কয়েক জনের বদলির সিদ্ধান্ত নেয়। এই বিচারপতির সম্মতিও নেওয়া হয়। ফলে যা হয়েছে ‘রুটিন’ প্রক্রিয়া মেনে। ভুলে যাবেন না, এই সরকার চলছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে। আর এ সরকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, আইনমন্ত্রী আমি নিজে এবং প্রয়াত অরুণ জেটলি, সুষমা স্বরাজ জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়েছি। লাঠি খেয়েছি, জেলেও গিয়েছি। আর আমরা ব্যক্তি, বিচারব্যবস্থা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য লড়েছি। ফলে আমাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনও অভিযোগ সাজে না।’’
রবিশঙ্করের এই মন্তব্য বিজেপিরই অনেকের কাছে বিস্ময়। কারণ, এ যাবৎ ছোট থেকে বড়— যে কোনও বিষয়ে, যে কোনও কৃতিত্ব দেওয়ার সময় মোদীর পরেই অমিত শাহের নাম নেওয়া হয়। কিন্তু আইনমন্ত্রী এমন নজির বাছলেন, যেখানে অমিত শাহের কোনও ভূমিকাই নেই। তা হলে কি দিল্লি হিংসার পর অমিত শাহের কাঁধ ছোট হচ্ছে দলে? এমনিতেই দিল্লির হিংসা নিয়ে অমিত শাহকে নিশানা করছেন বিরোধীরা। প্রশ্ন উঠেছে, যে ভাবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে দিল্লির রাস্তায় নামিয়েছেন মোদী, তাতে কি ক্ষুব্ধ শাহ? দিল্লির হিংসা রোধে অমিত শাহের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন করলে রবিশঙ্কর অবশ্য বলেন, ‘‘একেবারেই সহমত নই। গোড়ার দিন থেকেই সক্রিয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।’’ তবে এর বাড়তি শব্দ খরচ করেননি।
রবিশঙ্করের যুক্তি উড়িয়ে কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘যে ভাবে বিচারপতিকে বদলি করা হয়েছে, সেটি নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। দিল্লির হিংসা নিয়ে অন্য কোনও সাংবিধানিক সংস্থা সক্রিয় হয়নি। কিন্তু হাইকোর্টের এক বিচারপতি প্রশ্ন তুলতেই তিনি বদলি হয়ে যান। আর তাঁর বদলির নির্দেশিকায় লেখা হয়েছে, নতুন দায়িত্ব নিতে অবিলম্বে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এমন কড়া ভাষাও কখনও দেখিনি।’’