একরাতেই দিল্লির ‘রক্ষাকর্তা’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর বদলির সিদ্ধান্তের নিন্দায় সরব হয়েছেন দিল্লির হাই কোর্টের আইনজীবীরা। দিল্লি হাই কোর্টের ওই বিচারপতি এস মুরলীধরের সঙ্গে পরিচয় করা যাক।
বদলি হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টের বিচারপতির আসনে বসবেন এস মুরলীধর। তার আগে তিনি দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি ছিলেন।
১৯৮৪ সালে সেপ্টেম্বরে চেন্নাইয়ে প্রথম আইনজীবী হিসাবে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। তারপর ১৯৮৭ সালে দিল্লিতে চলে যান। দিল্লি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন।
সুপ্রিম কোর্টে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং নর্মদা বাঁধ তৈরির জন্য ঘরহারা মানুষদের জন্য লড়াই করে তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
এরপর তিনি জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরামর্শদাতা নিযুক্ত হন। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে ল’কমিশন-এর আংশিক সময়ের সদস্য হন তিনি।
বিচারপতি হিসাবে দিল্লি হাই কোর্টে তিনি ২০০৬ সাল থেকে রয়েছেন। ওই বছর ২৯ মে-তে দিল্লি হাই কোর্টে বিচারপতি হিসাবে কাজে যোগ দেন।
দীর্ঘ এই ১৪ বছর দিল্লি হাই কোর্টে বিচারপতি থাকাকালীন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নানা গুরুত্বপূর্ণ মামলা সামলেছেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গা মামলা। সমকামিতাকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা থেকে মুক্ত করার রায়ও তিনিই দেন।
সম্প্রতি দিল্লি-হিংসা নিয়েও ভীষণ তৎপরতা দেখিয়েছেন তিনি। দিল্লির মুস্তাফাবাদে গোষ্ঠী সংঘর্ষে বহু আহত স্থানীয় ছোট্ট হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পুলিশের থেকে কোনও সাহায্য না-পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার সময় বিচারপতি মুরলীধরের বাড়িতে যান চিকিৎসক, মানবাধিকার কর্মীরা। রাতেই তাঁদের আর্জি শুনতে রাজি হন বিচারপতি।
এমন একজন বিচারপতির বদলি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি বলে সরব হন আইনজীবীরা। কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি মুরলীধরের বদলির প্রসঙ্গ এর আগেও দু’বার উঠেছিল। ২০১৮-র ডিসেম্বর ও ২০১৯-এর জানুয়ারিতে।
‘ল, পভার্টি অ্যান্ড লিগাল এইড: অ্যাকসেস টু ক্রিমিনাল জাস্টিস’ নামে ২০০৪ সালের অগস্টে নিজের লেখা একটি বইও প্রকাশ করেন তিনি। প্রযুক্তি আইন এবং গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ উষা রামানাথন তাঁর স্ত্রী।
ব্যক্তিগত মহলে তাঁর আরও একটা পরিচয় রয়েছে। ‘ফিটনেস ফ্রিক’ হিসাবে পরিচিত তিনি। প্রতিদিনই নিয়ম করে লোধি গার্ডেনে মর্নিং ওয়াক এবং জগিং করেন। আর তাঁর রবিবার বরাদ্দ দিল্লির সেন্ট্রাল রিজ এলাকায় সাইক্লিংয়ের জন্য।