সংঘর্ষের পর সুনসান এলাকায় টহল দিল্লি পুলিশের। ছবি: রয়টার্স
বিজেপি নেতাদের উস্কানিমূলক মন্তব্যের ঘটনায় এফআইআর করার মতো ‘সহায়ক পরিবেশ’ এখন নেই বলে জানাল দিল্লি পুলিশ। আজ দিল্লি হাইকোর্টে তাদের তরফে বলা হয়, পুলিশকর্তারা সমস্ত অডিয়ো-ভিডিয়ো খতিয়ে দেখেছেন। তার পরে এফআইআর দায়ের পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ‘যথাযথ সময়’-এ এফআইআর দায়ের করা হবে।
উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশকে বুধবার ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলীধর। বুধবার রাতেই তাঁকে পঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির নির্দেশ জারি হয়। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি এন পটেলের বেঞ্চ আজ দিল্লি পুলিশকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তাদের হলফনামা জমা দিতে হবে। পরবর্তী শুনানি হবে আরও প্রায় দু’সপ্তাহ পরে, ১৩ এপ্রিল।
বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র জাফরাবাদে সিএএ-বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরেই উত্তর-পূর্ব দিল্লি জুড়ে অশান্তি তৈরি হয় বলে অভিযোগ। এর আগে দিল্লির বিধানসভা ভোটের প্রচারে অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বর্মার মতো বিজেপির সাংসদ-মন্ত্রীরাও সিএএ-বিরোধীদের নিশানা করেছিলেন। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই এফআইআর করেনি দিল্লি পুলিশ। বুধবার বিজেপি নেতাদের মন্তব্যের ভিডিয়ো দেখার পরে কেন এফআইআর হল না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মুরলীধর।
আজ দিল্লি পুলিশের হয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘পুলিশ সমস্ত অডিয়ো-ভিডিয়ো পরীক্ষা করেছে। আমরা এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিয়েছি।’’ দিল্লি সরকারের আইনজীবী রাহুল মেহরা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘সংঘর্ষের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১১টা এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তা হলে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে কেন এফআইআর দায়ের করা হবে না?’’ বস্তুত দিল্লি পুলিশ আজ জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরুর পরে ৪৮টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা নিয়ে মেহতার জবাব, ‘‘এই মুহূর্তে পরিবেশ সহায়ক নয়।’’
আদালত পরবর্তী শুনানি ১৩ এপ্রিল স্থির করছে দেখে মামলাকারী হর্ষ মন্দারের আইনজীবী বলেন, ‘‘প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন মারা যাচ্ছেন। একটু কম সময় দিন।’’ এই আর্জিতে অবশ্য লাভ হয়নি। বুধবারেই মেহতা বলেছিলেন, মন্দার বেছে বেছে কিছু ভিডিয়ো আদালতে পেশ করেছেন। এমন উস্কানিমূলক বিবৃতির আরও ভিডিয়ো রয়েছে। এ দিনও তিনি সে-কথা বলার সময় রাহুল মেহরা প্রশ্ন তোলেন, সব ভিডিয়োর ক্ষেত্রেই পুলিশ এফআইআর করছে না কেন? তখন মেহতা মন্তব্য করেন, ‘‘আমার কথার মধ্যে বাধা দেবেন না। এটা শাহিন বাগ নয়।’’ তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের একাংশ।
আজ লইয়ার্স ভয়েস বলে একটি সংগঠন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, আপ-এর মণীশ সিসৌদিয়া, আমানাতুল্লা খান, এমআইএম-এর আকবরউদ্দিন ওয়াইসি, ওয়ারিস পঠানদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য এফআইআর দায়েরের আর্জি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছে। হিন্দু সেনা অভিযোগ তুলেছে আসাদুদ্দিন ওয়াইসিদের বিরুদ্ধে।