কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। —ফাইল চিত্র
মুখে অমিত শাহের ইস্তফার দাবি। আর নিশানায় নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে গিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে ‘রাজধর্ম’ স্মরণ করানোর কথা বললেন সনিয়া গাঁধী, মনমোহন সিংহ। যে ‘রাজধর্ম’ পালনের কথা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রকাশ্যেই স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন মোদীকে। গুজরাত দাঙ্গার পরে। মোদী তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
দিল্লিতে তিন দিন ধরে হিংসা চলার পর গত কাল থেকে আচমকা চাঙ্গা হতে শুরু করেছে কংগ্রেস। গত কাল দলের কর্মসমিতির বৈঠক হয়েছে। সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন সনিয়া গাঁধী। আজ রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে সনিয়া জানান, কর্তব্য পালনে ব্যর্থ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অপসারণের দাবি জানিয়েছি। সরকারকেও যাতে রাজধর্ম পালনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন, সে অনুরোধও করেছি। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, তিনি দেখবেন।’’ একই কথা বলেন মনমোহনও। গোটা কংগ্রেস জানে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করে কিছু হওয়ার নয়। সনিয়াও পরোক্ষে আজ তা কবুল করেন।
বিজেপির প্রকাশ জাভড়েকরের পাল্টা অভিযোগ, বিরোধীরাই নিজ ধর্ম পালন করছে না। এই হিংসা তো দু’দিনে ছড়ায়নি। সংসদে নয়া নাগরিকত্ব বিল পাশের তিন দিন পর রামলীলা ময়দানে প্রথম উস্কানি দেন সনিয়াই। ‘এসপার-ওসপারে’র কথা বলেন। এই আইন কারও নাগরিকত্ব না-কাড়লেও প্রিয়ঙ্কা বলেছিলেন, লক্ষ লোককে বন্দি করা হবে, না-লড়লে ভীতু বলা হবে। রাহুলও বলেন, লড়াইয়ে পাশে আছে কংগ্রেস। উস্কানি ছড়িয়ে এখন তাঁরা গায়েব কেন? শান্তি ফেরাতে কেন তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাচ্ছেন না?
এই একই প্রশ্নটি উঠছে কংগ্রেসের অন্দরেও। সনিয়া গত কালই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে শান্তি মিছিল করা, আক্রান্তদের সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেও কংগ্রেসের কোনও নেতাকে বিধ্বস্ত এলাকার পথে দেখা যায়নি। এ পর্যন্ত হিংসা থামাতেও উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের কোনও নেতাকে!
কেন? কংগ্রেসের এক নেতার জবাব, ‘‘আমাদের দল ভোটেই নামেনি তো হিংসা থামানো! কেউ কারও মুখ দেখেন না। নেতাদের ভাবনা শুধু গাঁধী পরিবারের কাছাকাছি থাকা। এ ব্যাপারে প্রবীণে-নবীনে ভেদ নেই। ম্যাডাম সক্রিয় হলে প্রবীণেরাও একটু তৎপর হন। প্রিয়ঙ্কা পথে নামলে নবীনদের একাংশ। আর রাহুল গাঁধী তো বিদেশে। তাঁর আবার নিজস্ব গোষ্ঠী। দলের জন্য ভাববেন কে?’’
পথে নামার প্রশ্নে ঢের এগিয়ে গেরুয়া শিবির। দিল্লির হিংসায় পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে দিল্লিতে আজ ‘শান্তি মিছিল’ করেছেন বিজেপির বিতর্কিত নেতা কপিল মিশ্রও। সঙ্গে বিজেপি-আরএসএস। কংগ্রেস জানে, সনিয়ার বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ তুলে আসলে এই কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুরদের আড়াল করতে চাইছে বিজেপি।