প্রতীকী ছবি।
কাশ্মীর সীমান্তে অবিরাম সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন এবং পাক অনুপ্রবেশ নিয়ে উত্তপ্ত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। এই আবহে আফগানিস্তানে বাঁধ নির্মাণ নিয়ে নতুন একটি সংঘর্ষবিন্দু তৈরি হল বলে মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। গতকাল ভারত ঘোষণা করেছে, কেন্দ্রীয় সরকার কাবুলের বহুপ্রতীক্ষিত শাহতুত বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব নিচ্ছে। সূত্রের খবর, এই সিদ্ধান্তে নড়েচড়ে বসেছে পাকিস্তান। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে সংঘাতের রাস্তাতেও যেতে ইমরান খানের সরকার।
তবে বিষয়টি নিয়ে চাপা উত্তেজনা চলছিল দীর্ঘ দিন ধরেই। দিল্লি কাবুল নদী উপত্যকায় এই বাঁধ নির্মাণে উদ্যোগী হলে যে ইসলামাবাদ যে বাদ সাধবে এটাও স্পষ্ট ছিল সাউথ ব্লকের কাছে। তবু দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ার সার্বিক ভূকৌশলগত পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত এই সিদ্ধান্তই নিয়েছে বলে বিদেশমন্ত্রক সূত্রের খবর। এর ফলে প্রথমত আফগানিস্তানের আশরফ গনি সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক মধুর করা সম্ভব হবে। কৌশলগত ক্ষেত্রে বাড়বে নয়াদিল্লির প্রভাব। দ্বিতীয়ত, দোহায় তালিবানের সঙ্গে গনি সরকারের যে শান্তি আলোচনা চলছে, তাতে হস্তক্ষেপ করে নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রবল চেষ্টা করছে পাকিস্তান। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার জঙ্গিকে কাবুলমুখী করে তালিবানের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর রাস্তায় হাঁটছে পাক সরকার, এমনই খবর। আবার জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব নেওয়ার পর, তাঁর কাবুল-নীতির প্রভাব ভারতের উপর পড়বে বলেই মনে করছে দিল্লি। তাই আগে থেকেই কাবুলে নিজেদের উন্নয়নকামী মুখকে আন্তর্জাতিক প্রচারে আনতে চাইছে মোদী সরকার। তৃতীয়ত, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে পাকিস্তানকে সীমান্তে কড়া বার্তা দেওয়ার চেষ্টাও রয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আফগানিস্তান সংক্রান্ত একটি সম্মেলনে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, ভারত আফগানিস্তানের সঙ্গে শাহতুত বাঁধ নির্মাণ বিষয়ক চুক্তি সই করেছে। এর ফলে কাবুল শহরে ২০ লক্ষ মানুষ পানীয় জল পাবেন। এই বাঁধ নিয়ে ভারতের উৎসাহ সামনে আসার পরই সক্রিয় হয় পাকিস্তান। তাদের বক্তব্য ছিল, এই বাঁধ নির্মাণ হলে কাশ্মীর এবং আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তানে আসা জলের স্রোত রুদ্ধ হবে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কথায়, “শুধু বাঁধই নয়, আফগানিস্তানে গোষ্ঠী উন্নয়ন প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায় শুরু করার ঘোষণাও করেছেন বিদেশমন্ত্রী। এই মহাপ্রকল্পের অধীনে রয়েছে ৮ কোটি ডলার মূল্যের ছোট ছোট ১০০টি প্রকল্প।“