দিল্লির আকাশ আরও ঘোলাটে, দূষণ নিয়ে রাজনীতির চাপান-উতোর চলছেই

শনিবার ছুটির দিনে রাস্তায় গাড়ি কিছুটা কম থাকায় পরিস্থিতি সামান্য শুধরেছে বলে অনেকে বোধ করছেন ঠিকই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৭
Share:

উপায়: দূষণ থেকে বাঁচতে মাস্ক পরেই ক্লাস চলছে গুরুগ্রামের এক স্কুলে। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

আকাশ সেই ধোঁয়ায় ঢাকা। সেই দীপাবলির পর থেকে কার্যত দেখা নেই রোদের। সঙ্গে চোখ জ্বালা, শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট আর তা থেকে কিছুটা অন্তত বাঁচতে মুখে ‘মাস্ক’ তো আছেই। ছ’দিন পেরিয়েও হাল শোধরানোর লক্ষণ নেই দিল্লির। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গিন যে, দিল্লির দূষণ চোখ এড়ায়নি ভারত সফরে আসা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের। যে কারণে আগামী পাঁচ বছরে এ দেশের পরিবেশ রক্ষায় প্রায় ৮,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

শনিবার ছুটির দিনে রাস্তায় গাড়ি কিছুটা কম থাকায় পরিস্থিতি সামান্য শুধরেছে বলে অনেকে বোধ করছেন ঠিকই। কিন্তু ভর দুপুরেও খানিকটা দূর থেকে পুরো ঠাওর করা যাচ্ছে না পেল্লাই রাষ্ট্রপতি ভবনকে। বাতাস এতটাই দূষিত। আর আকাশ এতটাই ঘোলাটে। এই পরিস্থিতিতে ভারত বনাম বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচের ফল কী হবে, তা আঁচ করার থেকে রাজধানীর আমজনতা অনেক বেশি আগ্রহী পরিষ্কার আকাশ আর রোদের দেখা পেতে।

গতকালের তুলনায় আজ শনিবার, বায়ুর গুণগত সূচকের মান উন্নত হয়েছে কিছুটা। গতকাল দূষণের ওই সূচক ছিল ৪৮০-তে। আজ তা নেমেছে ৪০৭-এ। কিন্তু তা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় চার গুণ।

Advertisement

আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ৯টি, দেশের নয়া মানচিত্র প্রকাশ করল কেন্দ্র

ধোঁয়াশায় ঢেকেছে দিল্লির আকাশ। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

শনি ও রবিবার এমনিতেই অধিকাংশ স্কুলই ছুটি। কিন্তু তা ছাড়াও, পরিস্থিতি বিচার করেই স্কুলের দরজা খুলবে বলে জানিয়ে রেখেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। বাতাসের দূষণ কোথায় দাঁড়াচ্ছে, তা দেখে ৫ নভেম্বর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে দিল্লি সরকার।

দিল্লির এই দূষণ নিয়ে পরশু শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব ও দিল্লি— এই চার রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হবে যে, ফসলের নাড়া (গোড়া) পোড়ানো রুখতে আদৌ কী পদক্ষেপ করেছে তারা। মূলত যে সমস্যার কারণে এই সময়ে ফি বছর শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে দিল্লির।

আমজনতার এই দশার মধ্যেও রাজনীতির চাপান-উতোর অবশ্য থেমে নেই। গত কাল কেজরীবালের অভিযোগ ছিল, রাজ্যের কৃষকদের ফসলের গোড়া পোড়ানোয় উৎসাহ দিচ্ছেন পঞ্জাব, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীরাই। যাতে দিল্লির লোকেদের শ্বাসের সমস্যা হয়। আজ পাল্টা চিঠিতে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, ‘‘যে যা-ই বলুন, কোনও পঞ্জাববাসীই চাইবেন না যে, তাঁদের জন্য সমস্যায় পড়তে হোক দিল্লিবাসীদের।’’ তাঁর নিজের সন্তান এবং নাতি-নাতনিরাও দিল্লির বাসিন্দা বলে মনে করিয়ে দিয়েছেন অমরেন্দ্র।

বসে নেই বিজেপিও। প্রকাশ জাভড়েকর থেকে বিজয় গোয়েল— আজ সবাই কেজরীবালের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেছেন, ‘‘এই সমস্যা সমাধানে বছরভর পরিকল্পনাভিত্তিক কাজ করা জরুরি। তা না-করে শুধু কাগজে-টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে আর দশ দিনের জন্য গাড়ির জোড়-বিজোড় নীতিতে অন্তত দূষণ কমে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement