জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিক। ফাইল চিত্র।
প্রথমে এল সিবিআইয়ের সমন। এ বার দিল্লি পুলিশ সটান পৌঁছে গেল জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল বিজেপি নেতা সত্যপাল মালিকের ঠিকানায়।
গত এক সপ্তাহ ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে সরব সত্যপাল শনিবার হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের খাপ পঞ্চায়েত নেতাদের তাঁর বাড়িতে ডেকেছিলেন। খাপ নেতাদের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল দিল্লির আর কে পুরমে, সত্যপালের বাড়ি-সংলগ্ন পুরসভার পার্কে। কিন্তু দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী গিয়ে তাতে বাধা দেয়। পুলিশের দাবি, পার্কে সভার অনুমতি নেই। খাপ নেতাদের আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রতিবাদে মোদী জমানায় একাধিক রাজ্যের রাজ্যপাল পদে থাকা সত্যপাল নিজেই আর কে পুরম থানায় পৌঁছে যান। সত্যপালকে আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুললেও অমিত শাহর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, প্রাক্তন রাজ্যপালকে আটক করা হয়নি। তিনি নিজেই থানায় হাজির হয়েছিলেন।
সম্প্রতি সত্যপাল এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে জঙ্গি হামলার পিছনে সরকারি ব্যর্থতার কথা জানানোয় প্রধানমন্ত্রী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিআরপি জওয়ানদের জন্য বিমানের বন্দোবস্ত করেনি। গত লোকসভা নির্বাচনে পুলওয়ামার জঙ্গি হামলার রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা হয়েছিল বলেও ইঙ্গিত করেছিলেন সত্যপাল।
আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সত্যপালকে আক্রমণ করেছেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যখন ক্ষমতায় থাকেন, তখন অন্তরাত্মা জেগে ওঠে না কেন? এ সব অভিযোগ সত্যি হলে যখন রাজ্যপাল ছিলেন, তখন কেন চুপ ছিলেন?” তাঁর দাবি, “বিজেপি সরকার এমন কোনও কাজ করেনি যা লুকোতে হয়।’’
সত্যপাল বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী দুর্নীতিকে তেমন কিছু ঘৃণা করেন না। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপি ও আরএসএসের নেতা রাম মাধব তাঁর কাছে জম্মু-কাশ্মীরের সরকারি কর্মচারীদের জন্য অম্বানীদের রিলায়্যান্স সংস্থার বিমা প্রকল্পের হয়ে সওয়াল করতে এসেছিলেন। ওই বিমা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তেই সিবিআই সত্যপালকে সমন পাঠিয়েছে। এর পিছনে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ উঠলেও অমিত শাহের যুক্তি, ‘‘এ বার প্রথম নয়। এই নিয়ে তৃতীয় বার ওঁকে ডাকা হচ্ছে। নিশ্চয়ই সিবিআইয়ের কাছে কিছু নতুন সাক্ষ্যপ্রমাণ এসেছে।’’ অমিতের এই সমালোচনা ও তার পরে সত্যপালের বাড়িতে দিল্লি পুলিশের হানার পরে কংগ্রেস নতুন করে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে।
সত্যপাল অভিযোগ করেছেন, তিনি আর কে পুরমের পার্কে কোনও সভার আয়োজন করেননি। তাঁর বাড়িতে জায়গা কম বলে অতিথি খাপ নেতাদের জন্য পার্কে খাবারদাবারের আয়োজন হয়েছিল। পুলিশের উপর নির্দেশ ছিল, তা-ও করতে দেওয়া যাবে না। সত্যপাল সকলের সঙ্গে থানায় হাজির হলে তাঁকে আটক করার অভিযোগ ওঠে। দিল্লি পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ-পশ্চিম) মনোজ সি বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে আটক করিনি। উনি নিজেই সমর্থকদের নিয়ে থানায় এসেছিলেন।’’