সংসদের সভাকক্ষে রংবোমা হানা। ছবি: পিটিআই।
জুতোর মধ্যে গর্ত তৈরি করে তার মধ্য অতি সন্তর্পণে ভরে রাখা হয়েছিল রংবোমা। সেই জুতো পরেই গত ১৩ ডিসেম্বর সংসদে যান সাগর শর্মা, মনোরঞ্জন ডি। জুতোগুলি কে তৈরি করে দিয়েছিলেন? মুচিকে খুঁজতে সাগরের বাড়িতে গিয়েছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ শাখা। সোমবার সকালেই লখনউয়ে পৌঁছেছে তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, সাগর এবং মনোরঞ্জন যে জুতো পরে সংসদে ঢুকেছিলেন, সেগুলির নীচের দিকে সোলে গর্ত করা হয়েছিল। সেখানে বিশেষ উপায়ে রংবোমা ভরে আবার তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাতে ওই জুতো পরে হাঁটতে কোনও সমস্যা না হয় এবং হাঁটলে বাইরে থেকে যাতে বোঝা না যায় জুতোর ভিতরে কী আছে, সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হয়েছিল। জুতোগুলির উৎস যে লখনউ, ধৃতদের জেরা করে তা আগেই জানতে পারে পুলিশ। সোমবার তারা সরেজমিন তদন্ত করে দেখতে গিয়েছে।
সাগরের বাড়িতে গেলেও ধৃতকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি। প্রথম দিকে দিল্লি পুলিশের পরিকল্পনা ছিল, ধৃতকেও নিয়ে যাওয়া হবে। কিন্তু পরে নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয়। তদন্তকারীরা লখনউয়ে সাগরের বাড়িতে গিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।
সোমবার শুধু লখনউ নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ছ’টি রাজ্যে গিয়েছে দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী দল। তালিকায় আছে কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তরপ্রদেশ। সংসদ হানার ঘটনায় ধৃতদের সঙ্গে এই রাজ্যগুলির কোনও না কোনও যোগ রয়েছে। তাই সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত বুধবার লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সাগর এবং মনোরঞ্জন গ্যালারি থেকে চেম্বারে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁদের কাছে ছিল রংবোমা। তা দিয়ে তাঁরা চারদিকে ছড়িয়ে দেন হলুদ ধোঁয়া। কয়েক মিনিটের মধ্যেই অবশ্য তাঁদের ধরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সংসদের বাইরে থেকে একই সময়ে গ্রেফতার করা হয় নীলম আজাদ এবং অমল শিন্ডেকে। এ ছাড়া, সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিল্লির থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন ললিত ঝা এবং মহেশ কুনাওয়াত। তাঁদের সকলকেই সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।