ছবি: সংগৃহীত।
তিনি দস্যু থেকে ঋষি হয়েছিলেন। আর ইনি? পুলিশ থেকে হয়েছেন ডাকাতদলের নেতা!
রত্নাকর দস্যুবৃত্তি ছেড়ে কী ভাবে ঋষি বাল্মিকী হয়েছিলেন, সেই কাহিনি সকলের জানা। কিন্তু, দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের কর্তা আসলুপ খান কী ভাবে ডাকাতদলের নেতা হয়ে গেলেন? অনেক তদন্ত করে সেই সত্যিটাই সম্প্রতি খুঁজে বের করেছেন গোয়েন্দারা।
কী ভাবে প্রকাশ্যে এল আসলুপের ডাকাত-পরিচয়?
বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকে ধারাবাহিক ভাবে এটিএম লুঠের ঘটনা ঘটছিল। ওই লুঠ-চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সম্প্রতি সুরেশ নামে এক ব্যক্তিকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে কেরল পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। তদন্তের স্বার্থে সুরেশকে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেয় তারা। সুরেশকে জেরা করতেই যেন গর্ত থেকে কেঁচোর বদলে কেউটে বেরিয়ে আসে। জানা যায়, ওই এটিএম লুঠের চক্রটি পরিচালনা করেন আসলুপ খান নামে এক ব্যক্তি! তদন্তে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, এই আসলুপ খান আসলে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসার। মাস ছয়েক ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
আরও পড়ুন
গ্রেফতার রাহুল গাঁধী, উত্তাল মধ্যপ্রদেশ, কার্ফু চলছে মন্দসৌরে
সুরেশকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, চার-পাঁচ জনের একটি দল ওই অপারেশন চালাত। কোনও এটিএম লুঠ করার আগে তার কাছাকাছি বাড়ি বা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকত ‘ডাকাত’রা। মাসখানেক ধরে নজর রাখা হত এটিএমটির উপরে। সাধারণ ভাবে, যে সব এটিএম-এ সিসিটিভি খারাপ বা রক্ষী থাকত না, সেগুলিতেই ‘অপারেশন’ চালানো হত। জেরায় সুরেশ স্বীকার করেছে, এটিএম ডাকাতির গোটা পরিকল্পনাটা তৈরি করতেন আসলুপ। তা হলে সুরেশের দায়িত্ব কী ছিল? বিভিন্ন রাজ্য থেকে এটিএম-এর খবর আনার দায়িত্ব ছিল তার উপর।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর এক মাসের জন্য ছুটি নেন ক্রাইম ব্রাঞ্চের ওই কর্মী। পরে ফের এক মাসের জন্য ওই ছুটি বাড়ান আসলুপ। সেটাই শেষ। এর পর আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর। ইতিমধ্যে তাঁকে পুলিশের চাকরি থেকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে তার বেতনও।
সুরেশের কাছ থেকে খবর পেয়ে আসলুপের খোঁজ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। যদিও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আসলুপ এখনও লুকিয়ে রয়েছেন। তাঁর টিকি ধরতে পারেননি গোয়েন্দারা।