নষ্ট হয়ে দিয়েছে ফসল। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
দুর্গা পুজোর আগে দু’দফায় নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে ও জমা জলের জেরে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে হাবড়া ১ ব্লকে। কৃষি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্লকের সাতটির মধ্যে ছ’টি পঞ্চায়েতে চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ধান, আনাজ ও ফুল চাষে। মছলন্দপুর ১, মছলন্দপুর ২, বেড়গুম ১, বেড়গুম ২, কুমড়া ও পৃথিবা পঞ্চায়েতে প্রায় ১৮৫০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
চলতি মাসে প্রায় সাড়ে তেরো হাজার কৃষক ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে পারেন বলে অনুমান ব্লক কৃষি আধিকারিকের। ইতিমধ্যেই সাড়ে বারো হাজার চাষি ক্ষতিপূরণ চেয়ে ব্লকে আবেদন করেছেন বলে জানান হাবড়া ১ ব্লক কৃষি ও সেচ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ বাপি মজুমদার। তিনি জানান, ক্ষতির পরিমাণ সব থেকে বেশি হয়েছে ধানে, প্রায় ৮৫০ হেক্টর জমির।
পৃথিবা, কুমড়া ও মছলন্দপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েতে ধানের পাশাপাশি ফুল ও আনাজ চাষেও ক্ষতি হয়েছে। কুমড়া পঞ্চায়েতের পাঁচঘড়িয়ার বাসিন্দা দেবব্রত দত্ত বলেন, ‘‘বিঘা প্রতি ধান চাষে প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। সাড়ে চার বিঘা ধান চাষ করেছিলাম, পুরোটাই ক্ষতি হয়েছে। ওই জমি সাফ করে চাষের উপযুক্ত করতে বিঘা প্রতি আরও দেড় হাজার টাকা করে বাড়তি খরচ পড়বে। এ দিকে, বৃষ্টির জন্য আমার পটল ও সিম চাষেও ক্ষতি হয়েছে। সরকারি ক্ষতিপূরণ পেলে পরবর্তী চাষের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।’’
একই ব্লকের বাসিন্দা রমজান-জাফর মণ্ডলেরা সিম, পটল, কপি সহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেন। শীত শুরুর আগে ওই ফসল বাজারজাত করতে পারলে ভাল লাভ হয়। তবে এ বার লাভ তো দূর, চাষের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। সরকারি শস্য বিমা যোজনায় ক্ষতিপূরণের জন্য তাঁরা আবেদন করেছেন বলে জানালেন অনেকে।
বেড়গুম ১ এবং ২ পঞ্চায়েতে এখনও অনেক জমি জলের তলায়। অভিযোগ, এলাকার খাল সংস্কার না হওয়ার কারণে প্রতি বছরই তিন-চার মাস জমি জলমগ্ন থাকে। ফলে জমিকে ফের চাষযোগ্য করতে স্থানীয় সমিতি থেকে ঋণ নিতে হয় বলে জানালেন চাষিরা। জলমগ্ন পঞ্চায়েতগুলিতে মাছ চাষেরও ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এক ব্লক আধিকারিক।
ব্লক কৃষি দফতর সূত্রের খবর, চাষিদের আবেদন খতিয়ে দেখে বিমার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে।