ঘাম ঝরাতে রাজধানী মজেছে এরিয়াল ডান্সে

বিভিন্ন খাঁজ বার করা নকল পাহাড়ের পাথুরে দেওয়াল বেয়ে তরতরিয়ে উঠছেন কেউ। কেউ বা আবার সেখানে উঠেই শূন্যে লাফিয়ে, কয়েক পাক ঘুরে আশ্রয় নিচ্ছেন অন্য কোনও রিং-এ বা রেশমি দড়ির বন্ধনে। আবার সেই দড়ি বেয়েই নেমে আসছেন ব্যালে নাচের ভঙ্গিমায়। ঠিক যেন রুশ সার্কাস! মাধ্যাকর্ষণকে অগ্রাহ্য করে এ ভাবেই চলছে ‘এরিয়াল ডান্স’। দিল্লির জীবনধারায় শরীরচর্চার আধুনিকতম সংযোজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৫ ০৩:৩০
Share:

বিভিন্ন খাঁজ বার করা নকল পাহাড়ের পাথুরে দেওয়াল বেয়ে তরতরিয়ে উঠছেন কেউ। কেউ বা আবার সেখানে উঠেই শূন্যে লাফিয়ে, কয়েক পাক ঘুরে আশ্রয় নিচ্ছেন অন্য কোনও রিং-এ বা রেশমি দড়ির বন্ধনে। আবার সেই দড়ি বেয়েই নেমে আসছেন ব্যালে নাচের ভঙ্গিমায়। ঠিক যেন রুশ সার্কাস! মাধ্যাকর্ষণকে অগ্রাহ্য করে এ ভাবেই চলছে ‘এরিয়াল ডান্স’। দিল্লির জীবনধারায় শরীরচর্চার আধুনিকতম সংযোজন।

Advertisement

বিভিন্ন ফিটনেস ক্লাব, জিম, পর্বতারোহণের প্রস্তুতি ইত্যাদির কর্মশালায় বারবেল-ডাম্বেলের জগদ্দল সরিয়ে, দৌড়োনোর পরিচিত ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে এসে স্বতন্ত্র ভাবে জায়গা করে নেওয়া এই রুশ শৈলীটি ভারতবর্ষে নতুন হলেও পূর্ব এবং পশ্চিম ইউরোপে এটি বেশ কিছু দিন ধরেই যথেষ্ট জনপ্রিয়। তবে নয়াদিল্লিতে এই শৈলীর পথপ্রদর্শক মস্কো থেকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা এক রুশ ছাত্রী, দারিয়া নাজিমোভা।

‘সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ’ বিভাগে গবেষণা করতে আড়াই বছর আগে নয়াদিল্লি এসেছিলেন দক্ষ ‘এরিয়াল ডান্সার’ দারিয়া। প্রথমে ঘরোয়া ভাবে শুরু করেছিলেন তাঁর শিক্ষার প্রয়োগ। যার বিস্তার বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যে আপাতত মন্থর তাঁর গবেষণার কাজ! কারণ, দিল্লি এবং মুম্বইয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক আসতেই থাকছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত ভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। তাই মস্কো নয়, তাঁর আপাতত ঘরবাড়ি নয়াদিল্লিই।

Advertisement

সাবেকি রাশিয়ান সার্কাসের ট্র্যাপিজ আর বলশয় ব্যালের অ্যাক্রোব্যাটিক্সের মিশ্রণে এই বিশেষ নৃত্যশৈলী নিয়ে বিভিন্ন বহুজাতিক কর্পোরেট অনুষ্ঠানেও আগ্রহ বাড়ছে। নানা রকম প্রদর্শনের আয়োজন করা হচ্ছে নিয়মিত। দিল্লিতে তো বটেই, আরও বেশ কিছু শহরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই রোমাঞ্চকর নৃত্যশৈলী।

দারিয়া অবশ্য জানালেন, বিষয়টির মধ্যে কিছুটা ঝুঁকি রয়েছে নিঃসন্দেহে। সার্কাসেও যেমনটা থেকে থাকে। পিয়ানো, স্যাক্সোফোন কিংবা হালফিলের বলিউডি গানের তালে তালে চলতে থাকে শারীরিক কসরত। মঞ্চের মিটার দশেক উপর থেকে ঝুলে থাকা বিভিন্ন রঙের রেশমী দড়ির ফালি বেয়ে যখন ব্যালে নাচের ভঙ্গিমায় শরীরগুলো ওঠা-নামা করে, রোমাঞ্চ অনুভূত হয় বৈ কী। তবে গোটা বিষয়টির মধ্যেই রয়েছে নাচের সহজাত লাবণ্য। তফাৎ, পায়ের তলায় মাটি নেই নর্তক-নর্তকীদের। সবটাই শূন্যে!

এত ঝুঁকি সত্ত্বেও কেন বাড়ছে এই কঠিন নৃত্যশৈলীর জনপ্রিয়তা? দারিয়ার কথায়, ‘‘ব্যাপারটার মধ্যে রয়েছে রোমাঞ্চকর উন্মাদনা। অনেকটা ‘অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্ট’-এর মতোই নেশা জাগানোর উপাদান রয়েছে এতে।’’ এই কারণে তরুণ-তরুণীদের সহজেই আকৃষ্ট করছে এই নাচ। আর সঙ্গে সুরের সঙ্গত থাকায় কাটে একঘেয়েমিও। তা ছাড়া এই নাচের নিয়মিত অভ্যাসে মাংসপেশীর স্থিতিস্থাপকতা তো বাড়েই, ওজন কমাতেও এটা ম্যাজিকের মত কাজ করে বলে জানালেন দারিয়া।

তাই দৌড়ঝাঁপ-জিমন্যাসিয়াম-যোগাভ্যাসের গতানুগতিকতা ছেড়ে রোমাঞ্চ, উত্তেজনার নতুন ফিটনেস মন্ত্রে বেশ মজেছে রাজধানী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement