সকাল ৯টার সময়েই কাশ্মীর গেটে পৌঁছন সাহিল। নিক্কির মৃতদেহ নিয়ে সেখান থেকেই ধাবার পথ ধরেন। ফাইল চিত্র।
দক্ষিণ পশ্চিম দিল্লির ধাবার ভিতরে নীল রঙের নতুন ফ্রিজের দরজা খুলতেই নিক্কি যাদবের দেহ দেখতে পায়নি পুলিশ। মাঝারি মাপের ফ্রিজে সমস্ত র্যাক খুলে ঢোকানো ছিল একটি বেড়াতে যাওয়ার ব্যাগ। সেই ব্যাগ খুলেই প্রায় দুমড়ে-মুচড়ে ঢোকানো নিক্কির শরীরটা দেখতে পায় পুলিশ। এমনই জানা গিয়েছে দিল্লির নিক্কি হত্যার তদন্তকারীদের সূত্রে।
দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির মিত্রাওঁ গ্রামের বাইরে এই ধাবাটি খোলা হয়েছে সপ্তাহ তিনেক আগেই। সে ভাবে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়েনি এখনও। বন্ধ ধাবার ফাঁকা ফ্রিজে তাই দিন কয়েকের জন্য প্রেমিকার মৃতদেহ রাখতে বেশি ভাবেননি নিক্কির একত্রবাস সঙ্গী মিত্রাওঁ গ্রামেরই বাসিন্দা সাহিল গহলৌত। তবে গোটাটাই তিনি ভেবেছিলেন এবং বাস্তবায়িত করেছিলেন অত্যন্ত তাড়াহুড়োর মধ্যে। নিক্কিকে খুন করে তাঁর দেহ ফ্রিজে রেখে আবার বাড়ি ফিরে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর সময় লেগেছিল স্রেফ ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা।
কিন্তু কেন এত তাড়াহুড়ো করেছিলেন সাহিল? নিক্কি হত্যার তদন্ত যত এগোচ্ছে তত প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক ঘটনা। ছাড়াচ্ছে জট, এক সংবাদ সংস্থাকে নিক্কি হত্যার এক তদন্তকারী অফিসার বলেছেন, ‘‘ঘটনাটি ঘটে ১০ তারিখ সকালেই। নিক্কিকে নিয়ে ওই দিনই গোয়া যাবেন বলেছিলেন সাহিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোয়া যাওয়ার টিকিট কাটতে নিজামউদ্দিন রেলস্টেশনে গেলেও টিকিট পাওয়া যায়নি। এর পর নিক্কিকে নিয়ে পাহাড়ে যাবেন জানিয়ে হিমাচলের বাস ধরার জন্য কাশ্মীর গেটের উদ্দেশে রওনা হন সাহিল। পথেই ঝগড়া এবং নিক্কিকে খুন। আর এই গোটা বিষয়টা যখন হচ্ছিল তখন ক্রমাগত বাড়ি থেকে মায়ের ফোন আসছিল সাহিলের কাছে। কারণ বিয়ের জন্য একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার ছিল সাহিলের। অথচ সকাল ৯টা বেজে গেলেও বাড়িতে পৌঁছননি তিনি।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। সকাল ৯টার সময়েই কাশ্মীর গেটে পৌঁছন সাহিল। নিক্কির মৃতদেহ নিয়ে সেখান থেকেই ধাবার পথ ধরেন। পথে নিক্কির সমস্ত বেড়ানোর ব্যাগ ফেলে দেন। নিক্কির দেহ সম্ভবত নিজের বেড়ানোর ব্যাগে কোনও মতে ভরে ফ্রিজের ভিতর ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন সাহিল। তার পর রওনা হয়েছিলেন বাড়ির পথে।
এই ফ্রিজেই নিক্কির দেহ খুঁজে পায় পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত