ফাইল চিত্র।
দিল্লির আনাজ মান্ডির যে কারখানায় আগুন লেগে মারা গেলেন ৪৩ জন, গত সপ্তাহেই সেই বাড়িটি পরিদর্শনে এসেছিলেন পুরসভার কর্মীরা। কিন্তু উপরের তলাগুলি বন্ধ থাকায় বাড়িটির পরিস্থিতি পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি বলে পুরসভার একটি সূত্র দাবি করেছে। ৬০০ বর্গ গজের বাড়িটিতে ফের পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনাও ছিল পুরসভার। কিন্তু তার আগেই ঘটেছে গিয়েছে দুর্ঘটনা।
আজ ভোরে আগুন লাগার পরে ভিতরের পরিস্থিতি বুঝে উঠতে দমকলেরও অনেক সময় লেগেছে। দমকল কর্মীরা জানতেন না যে ওই বাড়িতে কোনও কারখানা রয়েছে এবং অনেক মানুষ আটকে রয়েছেন। সে জন্য শুরুতে দমকলের মাত্র চারটি ইঞ্জিন পৌঁছয় সেখানে। কিন্তু বাড়িটিতে পৌঁছলে ঘটনার ব্যাপকতা বুঝতে পারেন তাঁরা। বাড়ির ভিতরে মিলেছে প্রেশার কুকার ও রান্নার অন্য সরঞ্জাম। যা থেকে স্পষ্ট, শ্রমিকরা সেখানে রান্নাও করতেন।
কারখানাটির বৈধ ছাড়পত্রও ছিল না। এর পরেই আপ সরকার ও বিজেপি-শাসিত পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পরস্পরকে নিশানা করেছে দু’দল। মৃতের পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন কেজরীবাল। মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মোদী। সকালেই বিভিন্ন দলের নেতারা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়।
আপ সাংসদ সঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘বসতবাড়িতে যদি অবৈধ ভাবে কারখানা গড়া হয়ে থাকে, তা বন্ধ করার দায়িত্ব পুরসভার।’’ দিল্লি বিজেপির সভাপতি মনোজ তিওয়ারি কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে নিয়ে আনাজ মান্ডিতে যান। সেখানে গিয়ে অভিযোগ করেন, বিদ্যুতের তার যত্রতত্র ঝুলে রয়েছে। বারবার অভিযোগ সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আপের মুখপাত্র রাঘব চাড্ডা বলেন, ‘‘বিজেপি যে রাজনীতি করছে, তা লজ্জার এবং দুর্ভাগ্যজনক।’’ তাঁর দাবি, গাফিলতি নিয়ে বলতে গেলে বিজেপি-শাসিত পুরসভাকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। কংগ্রেস অগ্নিকাণ্ড নিয়ে বিজেপি ও আপ— দু’দলকেই নিশানা করেছে।
নেতাদের চাপানউতোরের মধ্যেই কারখানার মালিক রেহানকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রেহান ও তার ভাইয়েরা মিলে চার তলা বাড়ির বিভিন্ন ঘর ছোট ছোট কারখানার জন্য ভাড়া দিত। ব্যাগ, কাগজ, প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিস তৈরি হতো সেখানে। বাড়িটিতে থাকতেন শ’খানেক শ্রমিক। রেহানের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন ও গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে।