রাজেন্দ্রনগরে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে। ছবি: পিটিআই।
দিল্লির রাজেন্দ্রনগরে আইএএস কোচিং সেন্টারে দুর্ঘটনার পরই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে তৎপর হল দিল্লি প্রশাসন। বেআইনি নির্মাণগুলি চিহ্নিত করে সোমবার সকাল থেকেই বুলডোজ়ার নিয়ে সেই নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেছে দিল্লি পুরনিগম। সূত্রের খবর, এই নির্মাণগুলি ভাঙার আগে দিল্লি পুলিশের অনুমতিও চাওয়া হয়। পুলিশ অনুমতি দেওয়ার পরই বেশ কয়েকটি বুলডোজ়ার নিয়ে রাজেন্দ্রনগরে বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেছেন পুরনিগমের আধিকারিকরা। তাঁদের সঙ্গে রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
ইতিমধ্যেই পুরনিগম কমিশনার অশ্বিনী কুমার এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছেন। কোচিং সেন্টারের ঘটনার পর এই প্রথম দফতরের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল পুরনিগম। বৃষ্টিতে রাস্তায় জল জমার নেপথ্যে পুরনিগমের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন স্থানীয় মানুষজন এবং পড়ুয়ারা। কোচিং সেন্টারের ঘটনার জন্য পুরনিগমের বিরুদ্ধে একাংশের অভিযোগ ওঠার পরই দুই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
মেয়র শেলী ওবেরয় ঘটনার দিনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, যত বেআইনি নির্মাণ আছে, সেগুলি চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। তার পরই রবিবার থেকে সেই কাজ শুরু করে দেয় পুরপ্রশাসন। রাজেন্দ্রনগরের ১৩টি কোচিং সেন্টারকে চিহ্নিত করা হয়। প্রশাসনিক নিয়ম অমান্য করে ওই কোচিং সেন্টারগুলির বেসমেন্টে রমরমিয়ে কোচিংয়ের ব্যবসা চলছিল। সোমবার থেকেই বেআইনি নির্মাণগুলি ভাঙার কাজ শুরু করে দিল দিল্লি পুরপ্রশাসন। গত বছরে মুখার্জি নগরের একটি কোচিং সেন্টারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর নজরদারি শুরু করেছিল দিল্লি প্রশাসন। কোন কোন কোচিং সেন্টার নিয়মবিরুদ্ধ কাজ করছে, তা খতিয়ে দেখাও শুরু হয়। তার মধ্যেই রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের এই ঘটনায় পুরপ্রশাসনের উপর আরও চাপ বাড়ল বলে মনে করছেন অনেকেই।
কোচিং সেন্টারের ঘটনার পর থেকেই দিল্লি উত্তাল। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরপ্রশাসন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে পুরনিগমের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কোচিং সেন্টারের মালিকের গাফিলতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। পড়ুয়ারা সহজেই বেসমেন্ট থেকে বেরিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু বেসমেন্টের জন্য যে নিয়ম রয়েছে, তা মানেননি কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ।
শনিবার রাজেন্দ্রনগরের এক কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে। সেই জলে ডুবে মৃত্যু হয় তিন আইএএস পড়ুয়ার। আর এই ঘটনায় উত্তাল গোটা দিল্লি।এই ঘটনায় কোচিং সেন্টারের মালিক-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।