দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির আমলাতন্ত্রের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই চলছে আপ সরকারের। এই আবহেই এ বার দিল্লির মুখ্যসচিব নরেশ কুমার এবং ভিজিল্যান্স আধিকারিক ওয়াইভিভিজে রাজাশেখরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন কেজরীওয়াল মন্ত্রিসভার সদস্য সৌরভ ভরদ্বাজ। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, দুই আমলার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ তুলে, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার অনুমতি চেয়েছেন মন্ত্রী। এই ঘটনা দিল্লির আমলাতন্ত্রের সঙ্গে আপ সরকারের দূরত্ব আরও বৃদ্ধি করল বলে মনে করা হচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত অবশ্য জুন মাসের গোড়াতেই হয়েছিল। সে সময় কিছু অনির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন ভিজিল্যান্স আধিকারিক রাজাশেখর। তাঁর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল যে, দফতর থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল খোয়া গিয়েছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট একটি রায়ে জানিয়েছিল, আমলাদের বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি সরকার। তার পরই আইএএস আধিকারিক রাজাশেখরকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আপ সরকার। রাজাশেখরের অভিযোগ, গত ১৫ মে থেকে ১৬ মে-র মধ্যে তাঁর দফতর থেকে একাধিক ফাইল সরিয়ে অন্য অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এফআইআর-এ নির্দিষ্ট করে কারও নাম না করলেও, তাঁর নিশানায় ছিলেন মন্ত্রী সৌরভই। পাল্টা অভিযোগে মন্ত্রী জানিয়েছেন, ষড়যন্ত্র করে তাঁর নাম প্রকাশ্যে আনা হয়েছে।
গত ১১ মে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। কিন্তু তার পরেই অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, ‘জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস’ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন। (দিল্লির) মুখ্যমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারপার্সন। কিন্তু কমিশনে কেন্দ্র এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নরের প্রতিনিধি সংখ্যা বেশি থাকায় আমলাদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাঁরাই কার্যত ‘নির্ণায়ক’ হবেন। ১২ মে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনেন কেজরীওয়াল। তার পর থেকে এই নিয়ে বিতর্ক চলছেই।