Woman Blackmailed Through Dating App

আমেরিকার মডেল পরিচয়ে ৭০০ মহিলার সঙ্গে ‘ডেটিং’! ঘনিষ্ঠ ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল, দিল্লিতে ধৃত প্রযুক্তিকর্মী

পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিরই বাসিন্দা ওই যুবক। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। নয়ডার একটি বেসরকারি সংস্থায় ‘টেকনিক্যাল রিক্রুটার’-এর পদে কর্মরত। ভাল বেতন পান।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫১
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।

দিনে তিনি এক জন প্রযুক্তিকর্মী। আর রাত হলেই ‘আমেরিকার মডেল’। এ ভাবেই কয়েক বছর ধরে অনলাইন ডেটিং অ্যাপে একের পর এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। সেই সংখ্যাটা সাতশোরও বেশি। তাঁর শিকারের তালিকায় ছিল ১৮-৩০ বছরের তরুণী এবং মহিলারা। মূলত রাতেই নিজের সাম্রাজ্য মেলে ধরতেন ওই যুবক। কখনও ‘বাম্বল’, কখনও ‘স্ন্যাপচ্যাট’, কখনও আবার হোয়াট্‌সঅ্যাপে তাঁদের সঙ্গে আলাপ জমাতেন। তার পর ধীরে ধীরে বিশ্বাস অর্জন, তার পর ঘনিষ্ঠ ছবি পাঠানোর মতো পর্বও চলত। আর তার পরই শুরু হত যুবকের ব্ল্যাকমেলের পর্ব। শুক্রবার সেই প্রযুক্তিকর্মীকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিরই বাসিন্দা ওই যুবক। নাম তুষার বিস্ত। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। বর্তমানে নয়ডার একটি বেসরকারি সংস্থায় ‘টেকনিক্যাল রিক্রুটার’-এর পদে কর্মরত। ভাল বেতন পান। কিন্তু মহিলাদের প্রতি আকর্ষণ এবং আরও টাকা উপার্জনের তাগিদে পা রাখেন সাইবার অপরাধের দুনিয়ায়।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, একটি অ্যাপের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল নম্বর জোগাড় করেন। তার পর বিভিন্ন ডেটিং অ্যাপে নিজের ভুয়ো প্রোফাইল বানান। সেখানে নিজেকে আমেরিকার মডেল হিসাবে পরিচয় দেন। ব্রাজিলের এক মডেলের ব্যক্তিগত তথ্য এবং ছবি জোগাড় করে মহিলাদের সঙ্গে অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ জমাতেন। ছলেবলে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতেন। তার পর ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, ছবি আদানপ্রদান চলত। মহিলারা তাঁকে বিশ্বাস করে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিয়ো পাঠালে সেগুলিকেই ব্যবহার করে ওই মহিলা বা তরুণীকে ব্ল্যাকমেল করতে থাকেন। তাঁদের কাছে এ ভাবেই টাকা আদায় করতেন।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ‘বাম্বল’-এর মাধ্যমে ৫০০ মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেন তুষার। আর ২০০ মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন ‘স্ন্যাপচ্যাট’ এবং হোয়াট্‌সঅ্যাপে। গত বছরের ডিসেম্বরে তুষারের প্রতারণার ফাঁদে পড়েন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। ওই ছাত্রীর সঙ্গে আলাপ জমানোর পর তাঁর বিশ্বাস অর্জন করেন। তার পর তাঁদের মধ্যে ব্যক্তিগত বিষয়ে কথোপকথনও হতে থাকে। ছাত্রী তাঁর ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিয়োও পাঠান। তুষারকে সামনাসামনি দেখা করতেও অনুরোধ করেন। কিন্তু অভিযোগ, নানা অছিলায় তুষার সেই সাক্ষাৎ এড়িয়ে গিয়েছেন। কিছু দিন পর থেকেই ছাত্রীকে তাঁর পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি এবং ভিডিয়ো দেখিয়ে সমাজমাধ্যমে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেখাতে থাকেন। এ ভাবে ছাত্রীর কাছ থেকে বেশ কিছু টাকা আদায় করেন। আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন তুষার। শেষমেশ ছাত্রীটি তাঁর পরিবারকে বিষয়টি জানাতে বাধ্য হন। তার পরই পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ পূর্ব দিল্লির শকরপুরে তুষারের হদিস পায়। তাঁর কাছ থেকে ১৩টি ক্রেডিট কার্ড, ফোনে কয়েকশো মহিলার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিয়ো উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, তুষারের বাবা পেশায় গাড়িচালক। মা গৃহিণী। তাঁর বোন গুরুগ্রামে একটি সংস্থায় কাজ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement