দিল্লির সুলতানপুরীতে গাড়ির ধাক্কায় তরুণীর মৃত্যু। ছবি: সংগৃহীত।
কয়েক কিলোমিটার যাওয়ার পর দীপক উপলব্ধি করেছিলেন গাড়ির নীচে কিছু একটা আটকে রয়েছে। গাড়িতে বসে থাকা অন্য বন্ধুদের বিষয়টি তিনি জানিয়েওছিলেন। কিন্তু তাঁরা খুব একটা পাত্তা দেননি। বরং গাড়ি থামাতে নিষেধ করেছিলেন। জেরায় এ কথাই জানিয়েছেন দীপক। দিল্লি পুলিশের একটি সূত্রে এমনই দাবি করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই গাড়ির পাঁচ সওয়ারিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হলেন, দীপক খন্না, অমিত খন্না, মনোজ মিত্তল, কৃষ্ণ এবং মিঠুন।
বর্ষবরণের রাতে কাজ থেকে ফিরছিলেন অঞ্জলি সিংহ। স্কুটি চালিয়ে ফেরার সময় সুলতানপুরী এলাকায় একটি গাড়ি ধাক্কা মারে তাঁকে। তার পর তাঁর দেহ টেনে নিয়ে যায় ১৩ কিলোমিটার। তত ক্ষণে অঞ্জলির দেহ পুরো তালগোল পাকিয়ে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ির চালাচ্ছিলেন দীপক। তাঁর পাশের আসনে ছিলেন মিঠুন। বাকি তিন জন পিছনে আসনে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মত্ত অবস্থায় ছিলেন অভিযুক্তরা। তাঁদের গাড়ি থেকে একাধিক মদের বোতল উদ্ধার হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িটি আশুতোষ নামে এক যুবক তাঁর বন্ধু অমিত এবং দীপককে ধার দিয়েছিল। গাড়ির আসল মালিক লোকেশ। তাঁর কাছ থেকেই গাড়িটি বন্ধুদের জন্য নিয়েছিলেন আশুতোষ। অভিযুক্তদের মধ্যে মনোজ স্থানীয় বিজেপি নেতা। তাঁর একটি রেশন দোকান রয়েছে। কৃষ্ণ কনট প্যালেসে স্প্যানিশ কালচারাল সেন্টারে কাজ করেন। মিঠুন পেশায় হেয়ার ড্রেসার। তাঁরা প্রত্যেকে পরস্পরের বন্ধু।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক কিলোমিটার গাড়ি ছুটিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর একটা জায়গায় মোড় নিতেই গাড়ির নীচে আটকে থাকা একটি হাত দেখতে পেয়েছিলেন পিছনের আসনে বসে থাকা মিঠুন। তত ক্ষণে তাঁরা খাঞ্জাওয়ালার জন্টি গ্রামের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানেই গাড়ি থেকে নামেন অভিযুক্তরা। অঞ্জলির তালগোল পাকানো দেহ ওখানেই ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেন। তার পর গাড়িটি আশুতোষকে ফেরত দিয়ে আসেন। জন্টি গ্রামের কাছে অঞ্জলির নগ্ন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর মা রেখার অভিযোগ, অঞ্জলিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তাঁর কথায়, “ওর দেহে কোনও পোশাক ছিল না। আমার মেয়ের মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং বিচার চাই।” যদিও ইতিমধ্যেই এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।