দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বিচারপতি যশবন্ত বর্মার ফোনকলের তথ্য (সিডিআর) চেয়ে পাঠাল দিল্লি হাই কোর্ট। দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিচারপতি বর্মার বাংলোয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন ছিল, কারা তার দায়িত্বে ছিলেন, সেই তথ্যও দিতে বলা হয়েছে পুলিশকে। দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিকে উপাধ্যায়ের দফতর থেকে দিল্লির পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় অরোরাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নির্দেশে তথ্যগুলি চেয়েছেন দিল্লির প্রধান বিচারপতির রেজিস্ট্রার এবং সচিব নরেশচাঁদ গর্গ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে গর্গ জানান, তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না।
বিচারপতি বর্মার সরকারি বাংলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা থাকেন। গত ছ’মাসে দিল্লি পুলিশ এবং সিআরপিএফের কোন কোন আধিকারিক এই দায়িত্বে ছিলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। গত ছ’মাসে বিচারপতির ফোন থেকে কাকে কাকে ফোন করা হয়েছিল, কী ফোন তাঁর কাছে এসেছিল, তারও বিশদ তথ্য চেয়েছে হাই কোর্ট। সূত্রের খবর, বিচারপতির ফোনকলের তথ্য ইতিমধ্যে হাই কোর্টে পৌঁছে গিয়েছে।
গত ১৫ মার্চ বিচারপতি বর্মার বাংলোয় আগুন লেগে গিয়েছিল। পরিবারের সদস্যেরাই দমকল ডেকেছিলেন। দমকলের কর্মীরা বাংলোয় আগুন নেভাতে গিয়ে রাশি রাশি নগদ টাকা দেখতে পান বলে দাবি। তাঁদের কাছ থেকে পুলিশ খবর পায়। তারা গিয়ে টাকা উদ্ধার করে। ওই দিন আগুনের খবর পেয়ে কোন দমকল কর্মীরা প্রথম বিচারপতির বাড়িতে পৌঁছেছেন, তাঁদের তথ্যও জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
বিচারপতির বাংলো থেকে কত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, সেই তথ্য এখনও প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তবে এই বিষয়ে দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে যে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, তা নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে শীর্ষ আদালত। সেখানে পোড়া টাকার ছবি এবং ঘটনার দিনের ভিডিয়োও দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে বিচারপতি বর্মার বক্তব্য। তিনি গোটা বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেছেন। জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তিনি দিল্লিতে ছিলেন না। স্ত্রীর সঙ্গে ভোপালে গিয়েছিলেন। যে ঘর থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে, সেটি তাঁর মূল বাসভবনের বাইরে বলেও দাবি করেছেন বিচারপতি বর্মা। তাঁর দাবি, ওই ঘরে বাইরের লোকজনও যাতায়াত করে থাকেন। কী ভাবে সেখানে এত টাকা এল, তা তিনিও জানেন না।
বিচারপতি বর্মার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্ট তিন বিচারপতির কমিটি গঠন করেছে। তাতে রয়েছেন তিন রাজ্যের প্রধান বিচারপতি। পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি শীল নাগু, হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি জিএস সান্ধাওয়ালিয়া এবং কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি অনু শিবরমনকে নিয়ে কমিটিটি গঠন করেছেন দেশের প্রধান বিচারপতি খন্না।