নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ জঙ্গি। — প্রতীকী চিত্র।
কোনও নাশকতা না ঘটিয়ে শুধুমাত্র তার পরিকল্পনা করলেও সেটি জঙ্গি কার্যকলাপের শামিল। এ কথা জানিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখার এক জঙ্গিকে দোষী সাব্যস্ত করে নিম্ন আদালত। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিযুক্ত জঙ্গি। ওই মামলার শুনানিতে এ কথা জানায় হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ইউএপিএ আইনের ১৮ নম্বর ধারাতেও এ বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। যদি কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ না-ও ঘটে, শুধুমাত্র তার পরিকল্পনা করাও একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযুক্তের সঙ্গে পাকিস্তান যোগও পাওয়া গিয়েছে। সরকারি আইনজীবী জানান, জঙ্গি সংগঠনে নতুন নিযুক্তদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে পাঠানোর দায়িত্ব ছিল অভিযুক্তের উপর। ওই জঙ্গি নিজেও পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত লস্কর প্রধান এবং জামাত-উদ্-দাওয়ার প্রধানের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
আইনজীবী আরও জানান, ২০১৫ সালে বেঙ্গালুরুতে এই একই মামলায় অপর এক অভিযুক্তের সঙ্গে দেখা করেন অভিযুক্ত। সেখানে আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখার লক্ষ্য এবং পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় দু’জনের। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে প্ররোচনামূলক বক্তৃতা করারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিংহ এবং বিচারপতি অমিত শর্মার বেঞ্চ জানিয়েছে, দেশের তরুণদের মগজধোলাই করতে প্ররোচনামূলক মন্তব্য করা হয়েছে। দেশের বিরুদ্ধে বেআইনি কাজকর্মের জন্য তাঁদের নিযুক্ত করার চেষ্টা হয়েছে। কেবলমাত্র কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটেনি বলে বিষয়টিকে হালকা ভাবে দেখা যায় না। আদালত জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাঁর পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি পাকিস্তানে গিয়েছিলেন। জঙ্গি কার্যকলাপে তরুণদের নিয়োগ করার জন্য পাকিস্তানি কিছু গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর যোগও পাওয়া গিয়েছে। এই প্রমাণগুলি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আদালত। আদালত জানিয়েছে, শুধুমাত্র নাশকতার ঘটনাকেই জঙ্গি কার্যকলাপ বললে চলবে না। কোনও ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ এবং গোপনে কোনও পরিকল্পনা করাও জঙ্গি কার্যকলাপের শামিল।