দিল্লি হাইকোর্ট। ফাইল ছবি।
‘লভ জিহাদ’ সংক্রান্ত এক মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। ২০ বছরের এক মহিলাকে তাঁর স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দিয়ে আদালত জানিয়েছে, এক জন সাবালক মহিলা যেখানে খুশি থাকতে পারে, যাঁর সঙ্গে ইচ্ছা থাকতে পারে। ভিন ধর্মে বিয়ে রুখতে আইন আনার কথা ভাবছে দেশের বিভিন্ন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি। যা নিয়ে জাতীয় স্তরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। মঙ্গলবার বিয়ের নামে ধর্মান্তরণের বিরুদ্ধে অধ্যাদেশও জারি করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। সেই পরিস্থিতিতেই দিল্লি হাইকোর্টের দুই বিচারকের বেঞ্চ এই রায় বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারক বিপিন সাংঘি এবং রজনীশ ভাটনগর ওই ২০ বছরের যুবতী সুলেখাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁর স্বামী বাবলুর কাছে। সম্প্রতি সুলেখার পরিবারের লোকজন আদালতে পিটিশন দায়ের করে জানিয়েছিল, সুলেখা নাবালিকা এবং তাঁকে জোর করে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু ভিডিয়ো কনফারেন্সে সুলেখার সঙ্গে কথা বলে বিচারকরা নিশ্চিত হন, সুলেখা যখন বাড়ি থেকে পালিয়েছিল তখন তিনি সাবালিকা। এর পরই সুলেখাকে তাঁর স্বামীর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি, সুলেখার পরিবারের লোককে কাউন্সেলিং করানোর কথাও পুলিশকে বলেছে বিচারকদের ওই বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ইলাহাবাদ হাইকোর্টের ‘লভ জিহাদ’ সংক্রান্ত মামলার পরই এই রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। প্রিয়ঙ্কা খারওয়াড় নামে এক তরুণীকে গত বছর বিয়ে করেন সালামত আনসারি নামে এক ব্যক্তি। সালামতের শ্বশুরবাড়ির লোকের অভিযোগ, ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে তাঁদের মেয়েকে বিয়ে করেছেন সালামত। প্রিয়ঙ্কার পরিবারের অভিযোগ খারিজ করে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছিল— কে হিন্দু, কে মুসলিম তা নিয়ে আদালতের মাথাব্যথা নেই। বিষয়টিকে এ ভাবে না দেখে দু’জন প্রাপ্তবয়স্কের সম্পর্ক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কে কাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেবেন, সেটা ওই দুই ব্যক্তির মৌলিক অধিকার।
‘লভ জিহাদ’ বিষয়টি নিয়ে চর্চা চরমে উঠতেই মুখ খুলেছিলেন তৃণমূলের তারকা-সাংসদ নুসরত জাহান। এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভোট এলেই ‘লভ জিহাদ’ শব্দটা ঘুরে ফিরে আসে। অথচ দুটো শব্দের সম্পূর্ণ বিপরীত অর্থ। কিছুতেই পাশাপাশি বসতে পারে না।’’
আরও পড়ুন: কৃষকদের অভিযান রুখতে তৎপর দিল্লি পুলিশ, তৈরি সিআরপিএফ
আরও পড়ুন: জেল থেকে লালুর ফোন? তদন্তের নির্দেশ ঝাড়খণ্ড সরকারের