দিল্লি হাই কোর্ট। ফাইল ছবি।
হেফাজতে থাকার সময়ে কোনও অভিযুক্তের কুমারিত্ব পরীক্ষা অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করল দিল্লি হাই কোর্ট। বিচারপতি স্বর্ণকান্তা শর্মা জানিয়েছেন, কুমারিত্ব পরীক্ষার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এই ধরনের পরীক্ষা ভারতের সংবিধানে বর্ণিত সম্মানের অধিকারের পরিপন্থী।
১৯৯২ সালে কেরলের কোট্টায়ামের সেন্ট পায়াস কনভেন্ট থেকে উদ্ধার হয় বছর উনিশের সন্ন্যাসিনী সিস্টার অভয়ার দেহ। সেই হত্যাকাণ্ডে সিস্টার সেফি-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ অভিযোগ করে, তিন জনের ‘অনৈতিক’ কাজ দেখে ফেলার ফলেই সিস্টার অভয়াকে হত্যা করা হয়। পরে মামলার তদন্তের ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। এখন মামলা চলছে দিল্লির আদালতে।
হেফাজতে থাকার সময়ে সিবিআইয়ের উদ্যোগে তাঁর কুমারিত্ব পরীক্ষা করা হয়। তার বিরুদ্ধে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেন তিনি।
আজ সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি স্বর্ণকান্তা শর্মা বলেন, ‘‘কুমারিত্ব পরীক্ষার ক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার মহিলা ও অভিযুক্ত মহিলার অবস্থান ভিন্ন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এই ধরনের সিদ্ধান্ত সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে বর্ণিত মর্যাদার অধিকারের পরিপন্থী। এই পরীক্ষা আদৌ বিজ্ঞানসম্মত নয়।’’ যৌন নির্যাতনের শিকার মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের পরীক্ষার উপরে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
এই ঘটনায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ চেয়েছিলেন সিস্টার সেফি। আদালত জানিয়েছে, ২০০৮ সালে তাঁর উপরে হেফাজতে এই পরীক্ষা করা হয়েছিল। তখন এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিধি বা কোনও নির্দেশ ছিল না। তাই তখন এই পরীক্ষা নিষিদ্ধ ছিল না। তবে সিস্টার সেফির তরফে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে পেশ করা ক্ষতিপূরণের আবেদন ফের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেহাই কোর্ট।
সেই সঙ্গে হাই কোর্ট জানিয়েছে, সিস্টার অভয়া হত্যা মামলার বিচার শেষ হলে এই বিষয়ে মানহানির মামলার মতো পদক্ষেপ করতে পারেন সিস্টার সেফি।