দিল্লির শাহবাদ ডায়েরি এলাকায় কিশোরীকে কুপিয়ে খুন। প্রতীকী ছবি।
এক কিশোরীকে ছুরি দিয়ে একের পর এক কুপিয়ে যাচ্ছিলেন এক যুবক। পাশ দিয়ে নির্বিকারে হেঁটে যাচ্ছিলেন পাথচারীরা। কেউ ঘুরে তাকালেন। কেউ আবার এমন ভাব করে পাশ কাটিয়ে গেলেন যেন, কিছুই ঘটেনি। দিল্লির রোহিণীর শাহবাদ ডেয়ারি এলাকার ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ।
আরও আশ্চর্যের, যে বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটছিল, সেই বাড়ির বারান্দায় খেলছিল এক শিশু। ঘরের ভিতরে টিভি চলছিল। অলকা নামে ওই বাড়ির মহিলা এক সংবাদমাধ্যমে জানান, ঘরে টিভি চলছিল। হঠাৎই একটি মেয়ের চিৎকারের আওয়াজ শুনে উঁকি মারতেই যে দৃশ্য দেখেছেন, তা দেখে আতঙ্কিত হয় পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে বারান্দায় খেলতে থাকা তাঁর শিশুসন্তানকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন।
কিশোরীকে যেখানে খুন করা হচ্ছিল, তার কয়েক হাত দূরেই আরও একটি বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ির এক মহিলার দাবি, জোরে টিভি চলছিল। ফলে চিৎকার বা কান্নার কোনও আওয়াজ শুনতে পাননি। পরে তিনি জানতে পারেন, বাড়ির কয়েক হাত দূরেই এক কিশোরীকে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। তার পরই ওই মহিলার মন্তব্য, “কিশোরীকে খুন হতে দেখে পথচারীরাই বাধা দিলেন না, আমরা কেন দেব?”
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, শাহবাদ ডেয়ারি এলাকা গোটা শহরের মধ্যে অপরাধের জন্য কুখ্যাত। ফলে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস দেখান না। আরও এক বাসিন্দা ইন্দ্র দেব জানিয়েছেন, তিনি অসহায়ের মতো দেখে গিয়েছেন ওই ঘটনা। যদি সকলে মিলে রুখে দাঁড়াতেন তা হলে হয়তো কিশোরী বেঁচে যেত। তাঁর কথায়, “এখানে প্রকাশ্যে মাদকের নেশা চলে। কেউ যদি প্রতিবাদ জানান, তাঁর উপর হামলা করে। যে এলাকায় হামেশাই খুন, মারামারির মতো ঘটনা ঘটে, সেখানে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতে সাহস পান না কেউই।”
রবিবার রাত ৮টা নাগাদ রোহিণীর শাহবাদ ডেয়ারি এলাকায় এক কিশোরীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে সাহিল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার ১৮ ঘণ্টার মধ্যেই বুলন্দশহর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “আমরা কোনও প্রত্যক্ষদর্শীকে নিজেদের হেফাজতে নিইনি। তবে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জন কোনও রকম সহযোগিতা করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন।”