ছবি: পিটিআই।
পুলওয়ামা না হলে কি নরেন্দ্র মোদী লোকসভা ভোটে জিততে পারতেন?
প্রশ্নটা এখনও খচখচ করে অনেক বিরোধী নেতার মনে। তাঁদের অনেকের ধারণা, লোকসভার আগে মেরুকরণের সব অস্ত্রই ভোঁতা হয়ে গিয়েছিল। সে সময়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে কিস্তিমাত করেন মোদী। ‘থ্রি নট থ্রি’ আসনে শক্ত করেন জমি।
সেই ভোটের ন’মাস পর দিল্লিতে বিধানসভা ভোট হল। এটাই এখন মোদীর খাসতালুক। গুজরাত ছাড়ার পর রাজধানীতেই বছরের সিংহভাগ সময় কাটান তিনি। ভোটে চষে বেড়িয়েছেন তাঁরই সেনাপতি অমিত শাহ। সেই মেরুকরণ, সেই রামমন্দির, সেই হিন্দু-মুসলিম, সেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বালাকোট...। তবু সেই দিল্লিতে মুখ থুবড়ে পড়তে হল বিজেপিকে।
আরও পড়ুন: বহু মেয়ের মন জিতেছেন, এ বার ভোটেও জিতলেন রাঘব চড্ডা
অমিত শাহ তো পড়লেন, কিন্তু মোদীকে নিয়েই কি পড়লেন? বিজেপি নেতারা বলছেন, নরেন্দ্র মোদী একজন ‘কিংবদন্তি’ নেতা। তাঁকে ছোঁয়া কঠিন। সপক্ষে যুক্তিও দিচ্ছেন। যেমন দিল্লি বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারির বক্তব্য: ‘‘মানুষ এখন অনেক বেশি পরিপক্ক। লোকসভা ও বিধানসভায় দু’ভাবে ভোট দেন। ওড়িশায় যেমন। একসঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হল। অথচ ফল হল দু’রকম। আজ দিল্লিতে লোকসভা ভোট হলে বিজেপি সাতে সাতই জিতত।’’
পরিসংখ্যান অবশ্য বিজেপির এই যুক্তিকে খণ্ডনও করছে না। গত বছর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি তিনশোর বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসে। অথচ তার কয়েক মাস আগেই গোবলয়ের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ে হেরেছিল তারা। এমনকি লোকসভার পরও হরিয়ানাতে অনেক কাঠখড় পুড়িয়েই সরকার গড়তে পেরেছে বিজেপি। মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে মিলে জিতলেও পাকাপাকি সরকার আর গড়া হয়নি। ঝাড়খণ্ডেও হার হয়েছে। এ বারে দিল্লিও।
বিরোধীরাও মানছেন, কেন্দ্রে এখনও মোদী সেরা। কিন্তু রাজ্যে তিনি বিজেপির ‘মুখ’ হতে পারছেন না। অন্য দিকে বিজেপির যাবতীয় আলোচনা কংগ্রেসকে ঘিরে। বিজেপির বক্তব্য, যে রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি টক্কর হচ্ছে, সেখানে কংগ্রেস তা-ও জিতছে। কিন্তু যে রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে বিজেপির মোকাবিলা, সেখানে কংগ্রেস দাঁত ফোটাতে পারছে না। দেখতে গেলে কেন্দ্রেও কংগ্রেসের কোনও বিকল্প মুখ নেই, আবার রাজ্যে আঞ্চলিক দলের দাপটও মোকাবিলা করার ক্ষমতা নেই তাদের। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বললেন, ‘‘দলের এই হাল কেন, আমরা বিশ্লেষণ করব।’’