দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। — ফাইল চিত্র।
শুক্রবারই সুপ্রিম কোর্ট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে ইডির মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে একই দিনে সিবিআই মামলায় কেজরীর জেল হেফাজতের মেয়াদ বৃদ্ধি করল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আগামী ২৫ জুলাই পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে তাঁকে।
দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ কেজরীওয়ালের বাসভবনে হানা দিয়েছিল ইডি। রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ইডি হেফাজত শেষে তিহাড় জেলেই রয়েছেন কেজরী। দিল্লির নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত জামিনের আবেদন করেছেন তিনি। লোকসভা ভোটের সময় আপ প্রধানকে অন্তর্বর্তী জামিনে মুক্তি দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। গত ২ জুন জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর জেলে ফিরে যান কেজরী।
গত ২০ জুন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত কেজরীর স্থায়ী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল। ইডির তরফে বিরোধিতা করা হলেও তা কর্ণপাত করেননি বিচারক ন্যায় বিন্দু। যদিও এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। দিল্লি হাই কোর্টে ইডির তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন’ (পিএমএলএ)-এর ৪৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী জামিনের বিরোধিতা করে জমা দেওয়া নথিগুলি যথাযথ ভাবে বিবেচনা করার কথা ছিল রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের। কিন্তু বিচারক বিন্দু তা করেননি। গত ২৫ জুন ইডির আবেদন মেনে বিচারপতি সুধীরকুমার জৈন এবং বিচারপতি রবীন্দ্র দুদেজার অবকাশকালীন বেঞ্চ কেজরীর জামিন খারিজ করে দেয়।
২৫ জুনই রাতে তিহাড়ে গিয়ে কেজরীকে জেরা করে সিবিআই। পরের দিন তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। তার পর আদালত থেকেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তিন দিনের সিবিআই হেফাজত শেষে সিবিআইয়ের মামলায় জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। আদালতে সিবিআই দাবি করে, আবগারি মামলায় কেজরীওয়ালই ‘মূল ষড়যন্ত্রকারী’। সিবিআইয়ের আরও অভিযোগ ছিল, আবগারি মামলায় ১০০ কোটির বেশি দুর্নীতি হয়েছে। ২০২১ সালে জুন থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা ‘হাওয়ালা’র মাধ্যমে গোয়ায় স্থানান্তরিত হয়েছে। গোয়া নির্বাচনে সেই টাকা ব্যয় করেছে আপ।
উল্লেখ্য, ইডির গ্রেফতারি বেআইনি, এমন দাবি করে দিল্লি হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন কেজরী। কিন্তু হাই কোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ইডির গ্রেফতারি বেআইনি নয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান। শুনানি পর্বের শেষে গত ১৭ মে রায় সংরক্ষিত রেখেছিল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। শুক্রে সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশের পরে কেজরীর আইনজীবী বিবেক জৈন বলেন, ‘‘আমরা শীর্ষ আদালতকে বলেছিলাম, প্রয়োজনীয় নথি ও তথ্য ছাড়াই গ্রেফতারি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট সেই যুক্তির ভিত্তিতেই অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে। ১৭ জুলাই দিল্লি হাই কোর্টকেও আমরা একই কথা বলব।’’ কেজরীর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা অবশ্য সময়ই বলবে।