arvind kejriwal

Kejriwal vs Yogi: ‘শোনো কেজরীবাল’ বনাম ‘শোনো হে যোগী’! মোদীর মন্তব্য নিয়ে তুঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীদের টুইট-যুদ্ধ

সংসদে মোদীর মন্তব্যকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ‘নির্জলা মিথ্যে’ বলে দাবি করলে যোগী আদিত্যনাথ টুইট করেন, ‘কেজরীবালের স্বভাবই হল মিথ্যে কথা বলা।’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:০৬
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

২০২০-এর মার্চে আচমকা ঘোষিত লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকের দুর্দশার বকেয়া বিতর্ক দু’বছর পেরিয়ে প্রাসঙ্গিক হল। সৌজন্যে, সোমবার সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা। সেই বক্তৃতার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের মন্তব্যের সূত্রে ধরে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশে শুরু হয়ে গেল কাদা ছোড়াছুড়ি। এই দফায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে দুই প্রতিবেশী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল ও যোগী আদিত্যনাথ।

সংসদে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, করোনা ছড়িয়ে পড়ায় আপ শাসিত দিল্লি ও কংগ্রেস-শিবসেনা-এনসিপি জোট শাসিত মহারাষ্ট্রের ভূমিকা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার অর্থাৎ দিল্লিতে আপ এবং মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস (শিবসেনা ও এনসিপি-র নাম তিনি নেননি) ২০২০ সালে লকডাউন ঘোষণার পর পরিযায়ী শ্রমিকদের জোর করে বাড়ি ফিরিয়েছিল। তাতেই দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল করোনা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীবাল পাল্টা দাবি করেন, ‘নির্জলা মিথ্যা’ বলছেন মোদী।

Advertisement

তিনি হিন্দিতে টুইট করে নিজের বক্তব্য জানান। লেখেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নির্জলা মিথ্যা। করোনায় যাঁরা দুর্দশার মধ্যে পড়েছিলেন, যাঁরা প্রিয় জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি দেশের প্রধানমন্ত্রী সহৃদয় মনোভাব পোষণ করবেন এটাই প্রত্যাশিত। ভুক্তভোগী মানুষের দুর্দশার আঁচে প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির রুটি সেঁকছেন, এটা প্রত্যাশিত নয়।’

প্রধানমন্ত্রীর সোমবারের মন্তব্যের সঙ্গে সেই সময় কেজরীবালের বলা মন্তব্য দিয়ে একটি টুইট করে আপ-ও। তাতে লেখা হয়, মিথ্যে!

Advertisement

এর পরই প্রধানমন্ত্রীর হয়ে ব্যাট করতে আসরে নামেন ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তাঁরও হাতিয়ার সেই টুইট। আদিত্যনাথ লেখেন, ‘সম্মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে অরবিন্দ কেজরীবালের আজকের মন্তব্য অত্যন্ত নিন্দনীয়। গোটা দেশের কাছে কেজরীবালের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ একের পর এক টুইটে তাঁর সরাসরি অভিযোগ, ‘দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে কাজ করা পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরের আলো-জল বন্ধ করে দিয়ে, তাঁদের ঘুম থেকে ডেকে তুলে বাসে উঠিয়ে দিয়েছিলেন। তার পর বাস রওনা হয় উত্তরপ্রদেশ-বিহার সীমানার উদ্দেশে। কেজরীবাল ঘোষণা করেছিলেন আনন্দ বিহার থেকে উত্তরপ্রদেশ-বিহারগামী বাস ছাড়ছে। উত্তরপ্রদেশ সরকার বাসের ব্যবস্থা করে শ্রমিকদের নিরাপদে বাড়িতে ফেরানোর বন্দোবস্ত করেছিল। এর পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দিকে ব্যক্তিগত আক্রমণ শানিয়ে যোগীর দাবি, ‘কেজরীবালের স্বভাবই হল মিথ্যে কথা বলা।’ শেষ টুইটে আবার কেজরীবালকে সরাসরি ‘শোনো কেজরীবাল’ বলে সম্বোধন করে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘যখন মানবজাতি করোনার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, তুমি উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দাদের দিল্লি ছাড়তে বাধ্য করেছ। মধ্যরাতে শিশু-মহিলাদের উত্তরপ্রদেশ সীমানায় নামিয়ে দিয়ে তোমার সরকার একটি চূড়ান্ত অমানবিক ও অগণতান্ত্রিক কাজ করেছে। তোমাকে কি দেশদ্রোহী বলব না কি…’

চুপ থাকেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীও। তিনিও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে ‘শোনো হে যোগী’ সম্বোধন করে লেখেন, ‘তুমি আর কথা বলো না। উত্তরপ্রদেশের মানুষের মৃতদেহ যখন নদীতে ভেসে যাচ্ছিল, তখন তুমি কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশি পত্রিকায় নিজের সুনাম করে ভুয়ো বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলে। আমি তোমার মতো রুক্ষ ও নির্দয় শাসক জীবনে দেখিনি।’

মোদীর সোমবারের করোনা-মন্তব্য নিয়ে তাঁকে বিঁধেছে মহারাষ্ট্র সরকারের দুই দল কংগ্রেস-শিবসেনাও। শিবসেনা সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, ‘‘মোদীর চোখে কোনও কিছু ভুল হলে, মানবতার খাতিরে সেই ভুল আমরা একশো বার করব।’’

২০২০-এর মার্চে আচমকা লকডাউন ঘোষণার পর চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। পরিকল্পনা না করে কেন এ ভাবে লকডাউন ঘোষণা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সেই সময় থেকেই। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে জানা গেল, লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফেরাতেই দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement