দিল্লিতে বিধানসভা ভোটের প্রচারে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই
মঞ্চের কাপড় কোনও মতে বাঁশে বাঁধা। একটু জোরে হাওয়া দিলেই তা উড়ে যেতে পারত। ওই মঞ্চে কোনওক্রমে বসতে পারেন তিন-চার জন। পশ্চিম দিল্লির মাটিয়ালায় এমনই একটি মঞ্চ থেকে আজ দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। করলেন রোড শো-ও। প্রচারে উন্নয়নের চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অবশ্য জোর দিলেন মেরুকরণেই।
মাটিয়ালার মঞ্চে প্রথমেই বাধা! মাইক-বিভ্রাট, ভাল করে আওয়াজও আসছে না। একটু ‘হ্যালো-হ্যালো’ করে অমিত মাইক বদলাতে বললেন। কিছু ক্ষণ সভা করেই ছুটলেন রোড-শো করতে। সেখানে আজ সকালেই রোড-শো করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীবাল। ভোট বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দিল্লি জুড়ে এখনও ভোটের হাওয়া কেজরীর দিকেই। সে হাওয়া ঘোরাতেই মরিয়া অমিত। বিজেপির সব মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী, ছোট-বড় নেতাদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে অলিগলিতে ‘কার্পেট বম্বিং’ করতে বড়-মেজো-ছোট-খুব ছোট মিলিয়ে পাঁচ হাজারের বেশি সভা করতে হবে।
নরেন্দ্র মোদীর মুখ, শাহিন বাগ আর ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি— এই ত্রিফলায় দিল্লিতে বাজিমাত করতে চাইছে বিজেপি। প্রচার শুরুতেই তিন অভিমুখ স্পষ্ট করে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া আজ জানিয়েছেন, তিনি শাহিন বাগের পক্ষে। সেই মন্তব্যের রেশ টেনে সভায় অমিত বললেন, ‘‘দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী নির্লজ্জের মতো বলছেন, তিনি শাহিন বাগের সঙ্গে। দিল্লির শান্তিভঙ্গের কাজ করছেন। রাহুলবাবা (রাহুল গাঁধী) ও কেজরীবালের সঙ্গে পাকিস্তানের ইমরান খানের কী সম্পর্ক, জানি না। এঁরা একই সুরে কথা বলেন।’’ মঞ্চে যখন অমিত এ সব বলছেন, তখন জনতা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলেছে। সভার মেজাজ বুঝে রামমন্দিরের কথাও তুললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। রোড-শোয়েও ওঠে জয় শ্রীরাম ধ্বনি। ওই সভায় অমিতের সামনেই স্থানীয় সাংসদ প্রবেশ বর্মা বললেন, ‘‘এত দিন শাহিন বাগের নামই শুনিনি। আপনারা কী চান, পুরো দিল্লি শাহিন বাগ হোক?’’ বিজেপির মেরুকরণের চেষ্টাকে নিশানা করে আপের দিলীপ পাণ্ডে বলেন, ‘‘বিজেপির দম নেই কেজরীবালের কাজের মোকাবিলা করার।’’ রোড শোয়ের পরে অমিতের পাল্টা, ‘‘গোটা রাস্তা এলাম, কোথাও ওয়াইফাই পেলাম না। কেজরীবালের কাজ কোথায়? বরং নরেন্দ্র মোদীর প্রকল্পই দিল্লিতে রূপায়ণ করেননি। একবার জিতেছিলেন, তার পরে বারাণসী, হরিয়ানা, লোকসভা, পুরসভা হেরেছেন কেজরীবাল। এ বারে জেতান মোদীকে।’’