Delhi Assembly Election 2020

আপ-ইস্তাহারে কি হাওয়াবদলের আঁচ

এক মাস আগেও দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ধারে ও ভারে বাকি দুই বিপক্ষ থেকে কয়েক মাইল এগিয়ে ছিল অরবিন্দ কেজরীবালের দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১৫
Share:

ফাইল চিত্র।

গতবার নির্বাচনী ইস্তাহারে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার ভোল পাল্টানোর উপরে জোর দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। সে কাজে অনেকটাই সফল তিনি। এ বার ব্যবসায়ী শ্রেণিকে পাশে পেতে ক্ষমতায় ফিরলে দিল্লির দোকানপাট ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে পরিস্রুত পানীয় জল, বাড়ির দোরগোড়ায় রেশন পৌঁছে দেওয়ার সঙ্গেই পূর্বাঞ্চলিদের (বিহার ও উত্তরপ্রদেশের জনগণের একাংশ) ভোট পেতে ভোজপুরি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রের উপরে চাপ বাড়াবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আপ নেতৃত্ব।

Advertisement

এক মাস আগেও দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ধারে ও ভারে বাকি দুই বিপক্ষ থেকে কয়েক মাইল এগিয়ে ছিল অরবিন্দ কেজরীবালের দল। কিন্তু গত এক মাস ধরে শাহিন বাগের বিক্ষোভ এবং সেই শাহিন বাগকে কেন্দ্র করে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দলের নেতাদের মেরুকরণের রাজনীতিতে কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে আপ। কংগ্রেস পিছিয়ে থাকলেও বিজেপি যে মেরুকরণের রাজনীতি করে প্রতিদিন ব্যবধান কমাচ্ছে, তা বুঝতে পারছেন আপ নেতারা। তাই যে কেজরীবাল শুরুতে শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বিদ্যুৎ-পরিস্রুত পানীয় জলের মতো উন্নয়নমূলক বিষয়ে ভরসা রাখছিলেন, তিনিও শেষ পর্যন্ত শাহিন বাগ প্রশ্নে মুখ খুলতে বাধ্য হন। শুরু থেকে ওই আন্দোলনের বিষয়ে নীরব থাকায় দল মুসলিম সমাজের সমর্থন হারাচ্ছে বুঝে প্রকাশ্যে ওই আন্দোলনের সমর্থনে নামেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রী।

কেজরীবাল শাহিন বাগের সমর্থনে মুখ খোলায় খুশি বিজেপি নেতৃত্ব। উন্নয়ন নিয়ে মুখ না খুলে প্রচারের শুরু থেকেই মেরুকরণের কথা ভেবেছেন অমিত শাহেরা। তাই কেজরীবাল সরকারের দেশভক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। ঘটনাচক্রে আজ দলের ইস্তাহারে শিক্ষা পাঠ্যক্রমে দেশভক্তি বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দেন কেজরীবাল। আপের বক্তব্য, ‘‘দেশভক্তি বিজেপির একার সম্পত্তি নয়। তা ছাড়া বিজেপি মনে করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব হওয়াটাই শুধু দেশভক্তি! দিল্লির পড়ুয়ারা যাতে বিজেপির ভ্রান্ত দেশভক্তির ধারণা দেখে ভুল না শেখে, তাই পাঠ্যক্রমে বিষয়টি রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

গত পাঁচ বছরের অধিকাংশ সময়েই কেন্দ্রের অসহযোগিতায় তাঁর সরকার জনমুখী পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে পারছে না বলে বারবার সরব হয়েছেন কেজরীবাল। বিরোধীদের বক্তব্য, নতুন হাসপাতাল, কলেজ-স্কুল গড়ে তোলার যে প্রতিশ্রুতি কেজরীবাল দিয়েছিলেন, বহু ক্ষেত্রে তার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। দিল্লি পরিবেশ ও যমুনার জলদূষণ একই রয়ে গিয়েছে। এ বার কেজরীবাল ফের জিতলে আগামী পাঁচ বছর ফের কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। ফলে একাংশের ভোট বিজেপিতে যেতে পারে বলেই বুঝতে পারছেন কেজরীবালও। তাই আজ তিনি ইস্তাহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে দাবি করেন, ক্ষমতায় ফিরলে তাঁর সরকারের অন্যতম দাবি হবে, দিল্লিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া। যাতে আর পাঁচটি রাজ্য সরকারের মতোই দিল্লিকে উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে না হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement