দিল্লিতে প্রচারে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
ভোটের প্রচারে রোজই তেড়েফুঁড়ে উঠছেন অমিত শাহ। আগামিকাল থেকে মাঠে নামছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। আর মাত্র পাঁচ দিন পরেই দিল্লিতে বিধানসভা নির্বাচন। তবু শেষ লগ্নে প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের কাছে বার্তা পাঠাল বিজেপি।
কী সেই বার্তা? কংগ্রেস সূত্র বলছে, ‘‘মোদী সরকারের এক মন্ত্রী গাঁধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক নেতাকে বলেছেন, দিল্লিতে কংগ্রেস যেন আরও একটু জোর দিয়ে লড়াই করে।’’ হঠাৎ এমন বার্তা কেন? কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, বিজেপি নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, দিল্লির ভোটে মানুষের এখনও প্রথম পছন্দ অরবিন্দ কেজরীবাল। শাহিন বাগকে সামনে রেখে অমিত শাহ ও তাঁর দলবল মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। কিন্তু একই সঙ্গে চাইছেন, সংখ্যালঘু ভোট যথাসম্ভব কেড়ে নিক কংগ্রেস। সে ক্ষেত্রে কেজরীর ভোট ভাগ হবে। অথচ দিল্লিতে বিজেপি নেতাদের মতো আক্রমণাত্মক এখনও হয়নি কংগ্রেস।
সেই কারণেই অমিতের দলের তরফে সনিয়া গাঁধীর দলকে আরও সক্রিয় হওয়ার বার্তা। বিজেপির এক নেতাও বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি, তাতে বিজেপি খুব ভাল করলে টেনেটুনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছুঁতে পারে। কিন্তু সেখানেও সংশয় আছে। এখনও বিজেপির প্রধান তুরুপের তাস প্রধানমন্ত্রীর সভা বাকি। কিন্তু কংগ্রেস খুব ঢিলেঢালা প্রচার করছে। জমিতে তাদের দেখাই যাচ্ছে না। রাহুল গাঁধীও প্রচারে নামেননি। যেন কেজরীবালকেই ‘ওয়াক-ওভার’ দিতে চাইছেন।’’ আজ অবশ্য কংগ্রেস তাদের ইস্তাহার প্রকাশ করেছে। কেজরীকে টক্কর দিতে তিনশো ইউনিট পর্যন্ত বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, বেকার স্নাতকদের মাসে ৫ হাজার টাকা ও স্নাতকোত্তরদের সাড়ে ৭ হাজার টাকা বেকার-ভাতা, প্রবীণদের নিখরচায় বাস-সফর, মেয়েদের নিখরচায় পড়াশোনা, ১৫ টাকায় খাবার দেওয়ার একশো ‘ইন্দিরা ক্যান্টিন’ চালুর মতো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর সংখ্যালঘুদের মন জয় করতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ক্ষমতায় এলে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) বলবৎ করা হবে না দিল্লিতে।
কংগ্রেস বলছে, মঙ্গলবার থেকেই রাহুল গাঁধী, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা-রা প্রচারে নামছেন। এর সঙ্গে বিজেপির বার্তার যোগসূত্র নেই। বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্য আজ বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের সরকারে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কংগ্রেসের। সেই রাজ্যে কংগ্রেস মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণের চেষ্টা করছে। দিল্লিতে ওই ভাবে সরকার হলে একই পরিস্থিতি তৈরি হবে।’’ তা হলে কি দিল্লিতে মহারাষ্ট্রের ধাঁচে জোট সরকার হবে বলে আশঙ্কা করছে বিজেপি? দলের এক নেতার কথায়, বিজেপি ক্ষমতায় আসতে না-পারলেও আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস মিলে সরকার গড়ার অবস্থায় এলে বিজেপির পরোক্ষ লাভ। কারণ, কংগ্রেস কেজরীবালের ভোট কমিয়ে দেবে। সেই ভোট মূলত মুসলিম ভোট। কেজরীবাল অবশ্য আজও বলেন, ‘‘আমাদেরই ক্ষমতায় ফেরাতে মন স্থির করে ফেলেছে জনতা।’’