অপেক্ষায় কেজরীবাল। ছবি: পিটিআই।
গত দিন চারেক ধরে দিল্লির প্রাণকেন্দ্রে জামনগর হাউসে ভিড় জমাচ্ছেন জনা পঞ্চাশ লোক। সকলেই নাকি প্রার্থী এবং সকলেই ‘নয়াদিল্লি’ কেন্দ্র থেকে লড়তে চান! তাঁরা রোজ আসছেন, টোকেন নিচ্ছেন, অথচ সিংহ ভাগই মনোনয়ন পেশ করছেন না! ‘শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর মহা স্বামীজি ওরফে দীপক’ নামে একজন তো নয়াদিল্লি কেন্দ্র থেকেই তিন দলের হয়ে মনোনয়ন পেশ করেছেন! এমনকি বিজেপি, কংগ্রেসের হয়েও নাকি প্রার্থী তিনি।
চার দিন ধরে এমন কাণ্ড ঘটে চলেছে, অথচ টেরই পাননি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল। গত কাল রোড-শোয়ে দেরি হওয়ায় আর মনোনয়ন পেশ করেননি। আজ শেষ দিনে দুপুর বারোটা নাগাদ জামনগর হাউসে পৌঁছে দেখেন, তাঁর আগে লাইনে জনা চল্লিশ প্রার্থী। তাঁর টোকেন সংখ্যা ৪৫। কেজরীবালের বাবা-মা-ও গিয়েছিলেন। কিন্তু অনেক দেরি হবে বুঝে বেরিয়ে এলেন। বললেন, ‘‘সত্তর আসনে সত্তর পাবে অরবিন্দ। আমাদের আশীর্বাদ রইল।’’
কিন্তু কত দেরি? প্রায় ছ’ঘণ্টা!
নয়াদিল্লি কেন্দ্রে কেজরীর বিরুদ্ধে প্রার্থী বাছাই নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাথার চুল ছিড়েছে বিজেপি ও কংগ্রেস। শেষে গত কাল রাত দশটার পরে কংগ্রেস ওই কেন্দ্রে তাদের যুব নেতা রমেশ সবরওয়ালকে প্রার্থী করল। রাত দেড়টার পর বিজেপিও যুব মোর্চার নেতা সুনীল যাদবের নাম জানাল। দু’জনের কেউই ওজনদার নন। যা দেখে আজ সকাল থেকে আম আদমি পার্টির নেতারা বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম, বিজেপি চমক দেবে। কিছুই তো হল না।’’
হল না মানে! এমন হল যে শেষে আপ অভিযোগ করল, হারবে বুঝেই কেজরীকে হেনস্থা করার জন্য সব রকম ছক সাজিয়েছিল বিজেপি। টুইটে নানা রকম প্রচারের পাশাপাশি মনোনয়ন পেশের সময় জনা ৫০ লোক পাঠিয়েছে প্রার্থী সাজিয়ে! আপ নেতা সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, ‘‘শুধু মাত্র মুখ্যমন্ত্রীকে হেনস্থা করতে যাঁরা প্রার্থী হয়ে এসেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশের মনোনয়নের কাগজ ঠিক ছিল না। দশ জন প্রস্তাবক ছিল না।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আর কত নীচে নামবে বিজেপি?’’
বিজেপি অবশ্য সব অভিযোগ ওড়াচ্ছে। আজ সকালে তাদের প্রার্থী সুনীল যাদব বেঁকে বসেন। পরে সুনীলকে বাড়ি ডেকে প্রার্থী হতে বলেন নতুন বিজেপি সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। সুনীল আর কংগ্রেস প্রার্থী রমেশ দু’জনেরই দাবি, কেজরীকে হারাবেন। ছ’ঘণ্টা অপেক্ষার পরে মনোনয়ন পেশ করে কেজরীবাল যখন বেরোলেন, তখন অন্ধকার।