অমিত শাহ।
মিলুক বা না-মিলুক, সব ভোটের আগেই বাজি ধরেন অমিত শাহ। মোটের উপর সে রাজ্যের আসনের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পাবেন বলে দাবি করেন। দিল্লিতে গত কাল ভোট ঘোষণাও হয়ে গেল। এখনও পর্যন্ত বিজেপি কত আসন জিতবে, তা নিয়ে উচ্চবাচ্য করছেন না বিজেপি সভাপতি। এমনকি জিজ্ঞাসা করলেও নয়।
বিজেপির অন্দরেই রসিকতা চলছে, ‘‘এ ভাবে চললে স্লোগান হোক, অবকি বার তিন পার।’’ তিন মানে? তিনটির বেশি আসন পাওয়া! কেন? বিজেপির নেতারাই বলাবলি করছেন, পাঁচ বছর আগে দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে অরবিন্দ কেজরীবালের আপ ছিনিয়ে নিয়েছিল ৬৭টি আসন। বিজেপি পেয়েছিল বাকি তিনটি। এ বারে খোদ দলের শীর্ষ নেতৃত্বই যখন জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছেন না, তখন অনন্ত এই তিনটির বেশি আসন পাওয়ার লক্ষ্য তো নেওয়া যেতে পারে!
কিন্তু লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদীর বিপুল জয়ের পর হরিয়ানাতেও ফল মনের মতো হয়নি। মহারাষ্ট্রেও সরকার হাতছাড়া, আর ঝাড়খণ্ডে তো ভরাডুবি! এর পর দেশের রাজধানী দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের নাকের ডগায় আরও একটি বিপর্যয় হলে তো নাক কাটবে! অনেক সমীক্ষাও এখন দেখাচ্ছে, ৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তিন দিন পরে ফল বেরোলে বিজেপি ৮টির বেশি আসন পাবে না। কংগ্রেস পাবে ৩টি। আর কেজরীবালের দল এ বারেও ছিনিয়ে নেবে ৫৯টি আসন।
ভোটের এখনও এক মাস বাকি। কিন্তু ভোট পর্যন্ত এই ছবিটা বদলাতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কী ভাবে?
দলের এক নেতা বলেন, শাহ ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির মুখ মোদীই। গত বার দলের কর্মীরা বেঁকে বসেছিলেন। এ বারে আগামী এক মাসে বাড়ি বাড়ি পাঠানো হবে কর্মীদের। দিল্লি বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারিকে সামনে রেখে পূর্বাঞ্চলের কিছু ভোট টানা যেতে পারে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা বিজেপির উপরে ক্ষুব্ধ। তার উপর কেজরীবালের সস্তা বিদ্যুৎ-জল, মহিলাদের বিনামূল্যে বাস সফর, মহল্লা-ক্লিনিক, আধুনিক সরকারি স্কুলের জন্য জনপ্রিয়তা রয়েছে।
এক ধাক্কায় এই সব কিছু ছাপিয়ে যেতে মেরুকরণের তাসটিই লাগাতার জারি রাখার কথাই বলছেন বিজেপি নেতারা। নয়া নাগরিকত্ব আইনকে সামনে রেখে যে তাস খেলা শুরু হয়েছে। সামনে রামমন্দির নিয়ে ট্রাস্ট ঘোষণাও আছে। মন্দির নির্মাণের জন্য ঘরে ঘরে ১১ টাকা চাইতে যাওয়া হবে। দিল্লির ভোটের আগেই কেন্দ্রের বাজেট হবে। সেখানে ব্যবসায়ী, মধ্যবিত্তদের খুশি করার জন্য পদক্ষেপ ঘোষণা হবে। নির্ভয়া-কাণ্ডে দোষীদের ফাঁসির দিন ঘোষণা হয়েছে আজ। ভোটের ঠিক আগে এটি নিয়েও উত্তাপ বাড়ানো হবে। তার উপর মোদীর সভা তো আছেই। বিজেপির এক নেতার মতে, ‘‘যদি সব ঠিক মতো কাজে লাগে, তা হলে বিজেপি জিতেও যেতে পারে। না-হলেও একটি সম্মানজনক আসনে তো পৌঁছবেই।’’