ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত দিল্লি। ছবি: পিটিআই।
ক্রমশই প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি। শনিবার কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বসানো ৩৩টি ‘মনিটর’ থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, দেশের রাজধানী এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় ‘বাতাসের গুণমানের সূচক’ (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ৫০০ পেরিয়ে গিয়েছে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে এমন পরিস্থিতি ‘অতি ভয়াবহ’।
একিউআই ২০০ থেকে ৩৫০-র মধ্যে থাকলে বাতাসের মান ‘গুরুতর ক্ষতিকারক’ বলা হয়। ৩৫১ থেকে ৫০০ এর মধ্যে থাকলে ‘ভয়াবহ’। গুণমানের এই সূচকটি নির্ভর করে বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম-১০) এবং অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ (পিএম ২.৫)-এর উপরে। কার্যত কোনও অঞ্চলে প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতির হারই সেই অঞ্চলের একিউআই। ফুসফুসের ক্ষেত্রেও সব থেকে বিপজ্জনক এই অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই দিল্লির বাতাসে যা ঊর্ধ্বমুখী।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দীপাবলির পরে দূষণের মাত্রা কমবে বলে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের অনেকে আশাবাদী ছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেই পূর্বাভাস মেলেনি। দরিয়াপুরে গত ২৪ ঘণ্টার গড় একিউআই ৫৩৪! লাগোয়া গুরুগ্রাম, নয়ডা এবং ফরিদাবাদেও বাতাসের মান এখন বিপজ্জনক। বস্তুত শনিবারের তথ্য বলছে নয়ডায় প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫-এর মাত্রা ৫২৯-এ পৌঁছেছে। গুরুগ্রামে ৪৭৮-এ। এমনকি, ওখালার মতো ‘খোলামেলা’ এলাকাতেও একিউআই ৪৫০ হয়ে গিয়েছে!
আগামী ৪ ডিসেম্বর দিল্লিতে পুরসভা ভোট। ফলে এই পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের পালা। দিল্লি বিজেপির তরফে হিটলারের সঙ্গে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের তুলনা টেনে বলা হয়েছে, ‘হিটলার ইহুদি নিধনের জন্য জার্মানিতে গ্যাস চেম্বার বানিয়েছিলেন। দিল্লির বাসিন্দাদের জন্য কেজরীওয়াল বানাচ্ছেন এখানে’। অন্য দিকে, ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি (আপ)-এর অভিযোগ, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের পুরনো গাড়ি এবং হরিয়ানার কৃষকদের খড়বিচালি পোড়ানোর ঘটনায় দিল্লিতে দূষণ বাড়ছে।