wound healing device

ক্ষত সারাবে যন্ত্র, এক মাস নয় এক সপ্তাহেই! বিশেষ যন্ত্র উদ্ভাবন করলেন এমসের চিকিৎসকেরা

ওষুধ কিংবা চিকিৎসার অন্য কোনও পদ্ধতি নয়, যন্ত্রের ব্যবহারেই নিমেষে সারবে ক্ষত, এমনকি সংক্রমণের সম্ভাবনাও অনেকটাই কমবে, দাবি এমসের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫১
Share:

ক্ষত সারানোর যন্ত্র। ছবি: এক্স।

চোট-আঘাত, কিংবা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনও সমস্যা, নানা কারণেই চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষত নিরাময় হতেও বেশ সময় লাগে। আর যদি কোনও ভাবে সেই ক্ষতে নতুন করে আঘাত লাগে, তা হলে তো কথাই নেই! তবে সেই স‌মস্যার সমাধানে এক অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন দিল্লি এমসের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা। ওষুধ কিংবা চিকিৎসার অন্য কোনও পদ্ধতি নয়, যন্ত্রের ব্যবহারেই নিমেষে সারবে ক্ষত, এমনকি সংক্রমণের সম্ভাবনাও অনেকটাই কমবে, দাবি তাঁদের।

Advertisement

‘স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল বায়োডিজাইন’-এর সহায়তায় এই যন্ত্রটি তৈরি করেছে এমস। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বড়সড় ক্ষত সারাতেও উপযোগী ব্যাটারিচালিত এই যন্ত্র। গত দু’বছরে অন্তত ১০০ জন রোগীর উপর এটির পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তাতে সাফল্যের হার বেশ আশাপ্রদ বলে দাবি এমসের ট্রমা কেয়ার সেন্টারের অধ্যাপিকা সুষমা সাগরের। তিনি জানিয়েছেন, ঋণাত্মক চাপ এবং ক্রমাগত অক্সিজেন সরবরাহ করেই যন্ত্রটি দিয়ে ক্ষতের দ্রুত পরিচর্যা এবং নিরাময় করা যায়।

ক্ষতস্থানে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় অক্সিজেন পাঠানোর কারণে মাইক্রোবায়াল সংক্রমণের হারও কমে যায়। সেই সঙ্গে দ্রুত নতুন টিস্যু তৈরির মাধ্যমে তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে ক্ষত। চোট-আঘাত, পুড়ে যাওয়া কিংবা মধুমেহ জনিত কারণে ঘা হলে তা সারাতেও সক্ষম এই যন্ত্রটি, দাবি চিকিৎসকদের। কোনও ক্ষত সারতে সাধারণ ভাবে যদি ৩০ দিন সময় লাগে, এই যন্ত্র মারফত অক্সিজেন সরবরাহ করে তা ৭ থেকে ১০ দিনে নিরাময় করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

ডিভাইসটি কী ভাবে কাজ করে, তা ব্যাখ্যা করেছেন অধ্যাপিকা সুষমা। তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রথমে ক্ষতটির উপর মাপ মতো একটি ফোমের ড্রেসিংয়ের একটি স্তর বসিয়ে দেন। তার পর ড্রেসিংটি একটি ফিল্ম দিয়ে আটকে দেওয়া হয়, যার একটি অংশ খোলা থাকে যেখান দিয়ে একটি নল যুক্ত করা থাকে। যখন নলটি মেশিনের সাথে সংযুক্ত থাকে, তখন ঋণাত্মক চাপ তৈরি করে সেটি ক্ষতস্থান থেকে বের হওয়া রস শুষে নেয়। যন্ত্রের ভিতরেই একটি জায়গায় তা সংগ্রহ করে রাখা হয়।

অন্য একটি টিউব দ্বারা অতিরিক্ত অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় যা সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া নতুন রক্তবাহ তৈরি করে ক্ষত নিরাময়েও তা সহায়তা করে। বড় ক্ষত নিরাময়ে এই যন্ত্র দারুণ কার্যকর হতে পারে এবং বারবার ড্রেসিংয়ের ঝামেলাও এড়ানো যেতে পারে এর সাহায্যে, দাবি চিকিৎসকদের।

এই ধরনের ‘কম্বিনেশন থেরাপি ডিভাইস’ বাজারে পাওয়া যায় না। এই যন্ত্রের সাহায্যে প্রতিটি ড্রেসিং প্রায় পাঁচ দিন পর্যন্ত রাখা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সুষমা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিদিন ড্রেসিং পরিবর্তন করার দরকার নেই। যন্ত্রের ধারকটি ভর্তি হয়ে গেলে তখন পরিবর্তন করা যেতে পারে। এর সাহায্যে প্রশিক্ষিত নার্স বা প্যারামেডিকদের দ্বারা বাড়িতেও চিকিৎসা করা যেতে পারে।’’

উল্লেখ্য, ঋণাত্মক চাপ তৈরি করে ঘা সারানোর কিছু ডিভাইস বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু সেগুলি অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে এমসের তৈরি যন্ত্রটির দাম অনেকটাই কম হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement