মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে রেড রোডের ধর্না শেষ করার দু’দিনের মধ্যেই আবার দিল্লি যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠকে’ যোগ দিতেই রাজধানীতে যাচ্ছেন মমতা।
শুক্রবার থেকেই কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য বকেয়ার দাবিতে রেড রোডে ধর্নায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা নিজেই জানিয়েছেন ৪৮ ঘণ্টা ধর্নামঞ্চে থাকবেন তিনি। অর্থাৎ শনিবার, ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধর্না কর্মসূচি চলবে তাঁর। তৃণমূল সূত্রে খবর, মমতা দিল্লি যাবেন আগামী সপ্তাহে মঙ্গলবার। তার আগে ৫ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বিধানসভা অধিবেশনেও যোগ দেবেন তিনি। ওই দিনই বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে তিনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়ে বৈঠকও করবেন।
সোমবার অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকেই রাজ্যের বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে। পরের দিন অর্থাৎ ৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যের বাজেট পেশ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, ৬ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার প্রথমার্ধে বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েই দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লির জন্য রওনা হতে পারেন মমতা।
কেন মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন? সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। নবান্ন সূত্রে খবর, শীঘ্রই মমতার দিল্লি সফরসূচি প্রকাশ্যে আনা হবে। তবে তৃণমূলে মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ বুধবার দিল্লিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক রয়েছে মমতার। সেই বৈঠকেই যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছেন তিনি।
কাদের সঙ্গে বৈঠক তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই সময়ে সংসদে বাজেট অধিবেশন চলায় তৃণমূলের সাংসদেরা দিল্লিতেই থাকবেন। তাই মমতা দিল্লিতে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আবার যে হেতু সম্প্রতি বিরোধী জোট ইন্ডিয়ায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে, তাই সে ব্যাপারেও মমতা কোনও বৈঠকে যোগ দিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মমতার দিল্লি যাত্রা রাজনীতির কারবারিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে লোকসভা ভোটের আগে নীতীশের জোট ছেড়ে এনডিএ-তে যোগদান এবং ঝাড়খণ্ডে ইন্ডিয়া শরিক জেএমএম-এর মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতারির ঘটনায় জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই বাংলায় কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা চলাকালীন কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে সমীকরণ বদলের ইঙ্গিতও মিলেছে। এই পরিস্থিতিতেই আগামী মঙ্গলবার দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। সেই সফরসূচিতে কী কী থাকতে চলেছে সে দিকেই নজর রেখেছেন রাজনীতির কারবারিরা।
উল্লেখ্য, এর আগে মমতা দিল্লি গিয়েছিলেন গত বছর ডিসেম্বরে। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’ নিয়ে বৈঠকও করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকের পর মমতা বলেছিলেন, ইতিবাচক কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তিনি বাংলার প্রাপ্য বকেয়ার বিষয়টি দেখবেন বলেও কথা দিয়েছেন। সেই বৈঠকের দু’মাসের মধ্যেই আবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে রেড রোডে ধর্নায় বসতে চলেছেন মমতা। ফলে এ প্রশ্নও উঠেছে, তবে কি ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও কর্মসূচি গ্রহণ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তিনি?
আপাতত এই সব প্রশ্নের উত্তর জানতে উদ্গ্রীব হয়ে রয়েছে দেশ।