ফাইল চিত্র।
মনমোহন-সরকারের আমলে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির হস্তক্ষেপেই রাফাল-চুক্তি কার্যকর হয়নি বলে অভিযোগ তুললেন নির্মলা সীতারামন। তাঁর দাবি, ইউপিএ সরকার ফ্রান্সের দাসো সংস্থার থেকে ১২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার জন্য দর কষাকষি করেছিল। তার সিংহভাগ এ দেশে তৈরির সিদ্ধান্ত হলেও, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হ্যাল-এর অতগুলি যুদ্ধবিমান তৈরি করার পরিকাঠামো ছিল না। দাসো অ্যাভিয়েশনেরও মনে হয়েছিল, ভারতে যুদ্ধবিমান তৈরি করতে হলে তার খরচ অনেক বেড়ে যাবে। কংগ্রেসের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, নির্মলা পুরোপুরি অসত্য কথা বলছেন।
রাফাল নিয়ে রাহুল গাঁধী আক্রমণ শানানোর পরে এই চুক্তি নিয়ে একাধিক সাক্ষাৎকারে ব্যাখ্যা দিতে শুরু করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা। এরই মধ্যে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে রাফাল মামলায় তদন্তের দাবি জানিয়ে মামলার শুনানির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে এ বিষয়ে মামলা করেছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। তার আগে কংগ্রেস-ঘনিষ্ঠ তথা রবার্ট বঢরার ভগ্নিপতি তেহসিন পুণাওয়ালাও রাফাল চুক্তির তথ্য প্রকাশের দাবি জানিয়ে মামলা করেছিলেন।
কংগ্রেসের আশঙ্কা, সুপ্রিম কোর্ট রাফাল-চুক্তিতে তদন্তের দাবি নাকচ করে দিলে বিজেপি অস্ত্র পেয়ে যাবে। তাই আজ কংগ্রেসের আইনি শাখার তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, তেহসিনের মামলার সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও সম্পর্ক নেই। উনি ব্যক্তিগত ভাবে এই মামলা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টে যা-ই হোক, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলার যুক্তি, মোদী সরকার বায়ুসেনার জরুরি প্রয়োজন মেটাতেই ১২৬টির বদলে আপাতত ৩৬টি বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেন। তড়িঘড়ি যুদ্ধবিমান কিনতে হলে এর বেশি কেনা যায় না। কারণ সেই সঙ্গে নতুন পরিকাঠামোরও প্রয়োজন পড়ে। তার জন্য বাড়তি খরচ হয়।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার পাল্টা প্রশ্ন— প্রতিরক্ষামন্ত্রী কি জানেন, বায়ুসেনার জন্য ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান বরাদ্দ থাকলেও রয়েছে ৩৩ স্কোয়াড্রন? তা হলে অতিরিক্ত পরিকাঠামোর প্রশ্ন কেন লাগবে? ১২৬টি বিমান কেনা হলেও, তা আসতে ছয় থেকে আট বছর সময় লাগবে। তত দিনেও বায়ুসেনার পরিকাঠামো তৈরি হবে না? রণদীপের দাবি, কেন ৫২৬ কোটি টাকার বদলে এখন বিমান পিছু ১,৬৭০ কোটি টাকা দাম দেওয়া হচ্ছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী আগে তার জবাব দিন। তদন্তের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি তৈরি হোক। প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাঁর সামনে হাজির হোন।