শিক্ষকদের পোশাক। টুইটার
দেশের বেশ কিছু উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগেই করেছে। এ বার মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে চিরাচরিত গাউন বা রোব এবং ক্যাপ পরার নিয়ম বদলে ‘খাঁটি’ দেশীয় পোশাক পরতে বলা হয়েছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরবেন কুর্তা-পাজামা। ছাত্রীদের পরতে হবে সালোয়ার-কামিজ অথবা শাড়ি। শিক্ষকদের পরতে হবে আঙরাখা ও মরাঠী পণ্ডিতদের ধাঁচের পাগড়ি। পুণের সাবিত্রীদেবী ফুলে বিশ্ববিদ্যালয়েও চলতি বছরের সমাবর্তন থেকে পড়ুয়াদের জন্য কুর্তা-পাজামা এবং পাগড়ি পরা নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে। এই পোশাক বদল নিয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। অনেকে একে সমর্থন করলেও বহু শিক্ষকই বদলের বিরোধী।
কানপুর আইআইটি, বম্বে আইআইটি, রুরকি আইআইটির সমাবর্তনে রোব ও ক্যাপের বদলে ছাত্রদের কুর্তা-পাজামা আর ছাত্রীদের কুর্তা-চুড়িদার পরা শুরু হয়েছে। সঙ্গে উত্তরীয়ও ছিল। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৬ বছর পরে ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সমাবর্তন হয়। সেখানেও ছাত্রদের জন্য সাদা কুর্তা-পাজামা আর ছাত্রীদের সাদা কুর্তা-চুড়িদার অথবা শাড়ি পরা বাধ্যতামূলক করা হয়।
জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং বর্তমানে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষক অভিজিৎ কুণ্ডুর মতে, ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ইতিহাসকে দেখতে গেলে সব সময়ই যে ভাল হয়, তা নয়। ‘‘একেবারে পিছোতে পিছোতে কোথায় যাব?’’ —প্রশ্ন অভিজিতের। এ বছর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের ব্রিফ কেসের বদলে সনাতন ভারতীয় ‘বই-খাতা’ নিয়ে বাজেট পেশের প্রসঙ্গও তুলেছেন অভিজিৎ। লাল কাপড়ে মুড়ে বাজেটের নথি নিয়ে সংসদে বাজেট পেশ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। সরকার পক্ষের যুক্তি ছিল ঔপনিবেশিক রীতিকে ঝেড়ে ফেলে সনাতন ভারতীয় রীতিতে ফেরা হল। অভিজিতের বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে ঔপনিবেশিক বলে সব কিছু ঝেড়ে ফেলা খুব কাজের কাজ নয়।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আসন্ন সমাবর্তনের প্রস্তুতি চলছে। রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু জানান, সমাবর্তনের পোশাক হিসেবে তাঁদের চিরাচরিত গাউন বা রোবই থাকছে। বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরীর বক্তব্য, রাজ্য সরকার যদি এ বিষয়ে নিয়ম বদল করে, তা হলে হয়তো বদল হবে। তার আগে সম্ভাবনা নেই।