গুলিবিদ্ধ হাতির দেহ। বৃহস্পতিবার ভারত-ভুটান সীমান্তে। নিজস্ব চিত্র
ভারত-ভুটান সীমান্তে মিলল গুলিবিদ্ধ হাতির দেহ। আর সেই ঘটনার সূত্র ধরেই বন দফতর, পুলিশ ও সেনা খবর পেল, বড়ো ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় ফের ঘাঁটি গাড়ছে মাওবাদীরা!
পুলিশ জানায়, অসমের চিরাং জেলায় দেউশ্রী এলাকায় অক্সিগুড়ির কাছে বন্য হাতির মৃতদেহ দেখে গ্রামবাসীরা বন দফতরকে খবর দেয়। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, হাতিটিকে গুলি করে মারা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ২টি খালি কার্তুজও মেলে। হস্তিনীর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। দিন চারেক আগেই চারটি হাতির দাঁত-সহ দুই ব্যক্তিকে ধরেছিল বন দফতর।
চিরাঙের ডিএফও ব্রহ্মানন্দ পাতিরি জানান, ‘‘এই এলাকার মানুষের কাছে হাতি মারা বন্দুক নেই। হাতি মারতে হলে ৪৫০-৫০০ ম্যাগনাম শটগান বা .৩০৩ রাইফেল থাকতে হবে। আমরা উদ্ধার হওয়া কার্তুজ ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে স্থানীয় মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে কয়েক মাস ধরেই বহিরাগত মানুষজনের আনাগোনা চলছে এখানে। তারা টাকা ও বন্দুক দিচ্ছে। বলছে, হাতির দাঁত ও গন্ডারের খড়্গ এনে দিতে হবে। দাঁতের বাজার দর কেজিপ্রতি ২ লক্ষ টাকা।’’ গ্রামবাসীদের পক্ষে জাতীয় উদ্যানের ভিতরে ঢুকে গন্ডার মারা কঠিন। কিন্তু ভারত-ভুটান সীমান্তে হাতি প্রচুর। তাই হাতি মারা শুরু হয়েছে।
এসএসবির এক কর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনে হচ্ছে বহিরাগতরা মাওবাদী হতে পারে। এই এলাকা দীর্ঘদিন এনডিএফবির হাতে ছিল। বড়ো শান্তি চুক্তির পরে তারা মূল স্রোতে ফিরেছে। কিন্তু উগ্রপন্থা একবার যেখানে ঘাঁটি গাড়ে সেই এলাকা ফাঁকা থাকে না। শূন্যস্থান পূরণ করতেই সম্ভবত প্রচুর আদিবাসী, চা শ্রমিক ও নেপালির বাস থাকা এই এলাকাকে নিশানা করছে মাওবাদীরা।
অসমের গোলাঘাট থেকে শিবসাগর, ধেমাজি-লখিমপুরে অতীতে মাওবাদের প্রচার ও প্রসার হয়েছিল ব্যাপকহারে। অসমের কৃষক নেতা অখিল গগৈ এখনও মাওবাদী যোগাযোগের অভিযোগে কারাবন্দি।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মারা যাওয়ার আগে এক সময় অসমের বড়োভূমিতেও আশ্রয় নিয়েছিলেন কিষেণজি। কেএলওর সক্রিয় সহযোগিতা ছিল মাওবাদীদের সঙ্গে। সম্প্রতি বাংলার জঙ্গলমহলে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে মাওবাদী শক্তি।