সিংঘু সীমান্তে এক কৃষক। ছবি: পিটিআই
২৬ জানুয়ারি ট্র্যাক্টর মিছিলের নামে যা হয়েছে, তাতে সাধারণ কৃষক থেকে নেতাদের অনেকেই হতাশা যেন আর গোপন করে রাখতে পারছেন না। সিংঘু সীমান্তে কৃষকদের আন্দোলনস্থলে যেন কেউ হতাশার চাদর টেনে ঢেকে দিয়েছে। নেই সেই উৎসাহ, সেই উদ্দীপনা।
শেষ দু’মাস ধরে প্রতি দিন সিঙ্ঘু সীমান্তে সকাল হত কৃষকদের স্লোগানে। সারা দিন চলত সভা, বক্তৃতা করতেন কৃষক নেতারা। কিন্তু সকালের চেহারাটা ছিল একেবারেই আলাদা। জমায়েতে লোক ছিল না তেমন। বক্তৃতা করতেও ওঠেননি কেউ। মনের জোর যেন হারিয়ে ফেলেছেন কৃষকরা, তাই এলাকা ঢেকে গিয়েছে নীরবতার চাদরে।
বেলার দিকে কয়েক জন কৃষক নেতা বক্তব্য রাখতে ওঠেন। সেখানে সাফাই দেওয়ার মতো করে তাঁরা দীপ সিধুর ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে দেন। বলেন, ‘এটি সমাজ বিরোধীদের কাজ’। তাতেও শরীরী ভাষা পাল্টায়নি কৃষকদের।
লুধিয়ানা থেকে আসা এক কৃষক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন দিল্লিতে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখের। কৃষকরা চাননি, পরিস্থিতি এই দিকে যাক। ওটা আমাদের উৎসব ছিল আর কেউ এসে তা ভেস্তে দিল।”
ঘটনা নিয়েও নানা লোকের নানারকম মতামত রয়েছে। কৃষক নেতা হকিরত গেরওয়াল জানিয়েছে, ‘‘আমাদের সন্তানরাই দিল্লিতে নিরাপত্তাকর্মীদের কোনও না কোনও দফতরে কাজ করে। আমরা কেন তাঁদের মারতে যাব? কিছু মানুষের বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তের জন্য আজ এই ঘটনা ঘটেছে।’’
সিঙ্ঘু সীমান্তেই ২৬ জানুয়ারির ঘটনায় আহত কৃষকরা আছেন। ক্ষতে ওষুধ দিচ্ছেন কেউ। তবে ভিড় আগের থেকে কিছুটা হলেও কম। কৃষকদের যুক্তি ভিড় কমে যাওয়ার কারণ, অনেকেই এই ট্র্যাক্টর মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য এসেছিলেন। তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। ফিরে এলে আবার ভিড় হবে।
বুধবার দুটি কৃষক সংগঠন ঘোষণা করেছে, তারা অন্দোলন থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তাতেও অবশ্য আন্দোলন প্রত্যাহারের কোনও খবরম মেলেনি। নতুন করে জোট বাঁধতে চাইছেন কৃষকরা। আত্মবিশ্বাস জড় করে বলতে চাইছেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কৃষক আন্দোলন চলবে।