ভারতে প্রত্যর্পণের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বছর তিনেক আগে মারা গিয়েছে ইকবাল মির্চি। কিন্তু পানামা নথিতে ফের উঠে এল তার নাম। দাউদ ইব্রাহিমের আর্থিক লেনদেনের অন্যতম মুখ বলে পরিচিত ছিল ইকবাল। পানামা নথি নিয়ে তদন্তকারী সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভারতীয় গোয়েন্দাদের ডসিয়ারের চেয়ে অনেক বেশি তথ্য পাওয়া গিয়েছে ওই নথি থেকে।
পাশাপাশি, পানামা নথিতে থাকা কোনও সংস্থার সঙ্গে তাঁর যোগ নেই বলে আজ দাবি করেছেন অমিতাভ বচ্চন। পানামা নথি অনুযায়ী, বাহামা ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসে ৪টি জাহাজ সংস্থার পরিচালন পর্ষদে ছিলেন অমিতাভ। আজ অমিতাভ জানান, তাঁর নামের অপব্যবহার হয়ে থাকতে পারে। দেশে ও বিদেশে তাঁর যাবতীয় কর মেটানো রয়েছে। পানামা নথি সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদনটিতেও বলা হয়নি যে, তিনি কোনও অন্যায় কাজ করেছেন। ভার্জিন আইল্যান্ডসের অন্য একটি সংস্থার পরিচালকদের মধ্যে নাম ছিল অমিতাভের পুত্রবধূ ঐশ্বর্যার। কালই ওই তথ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তিনিও। পানামার এক আইনজীবী সংস্থার দফতর থেকে ফাঁস হওয়া নথি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে নানা দেশের রাজনীতিক ও কূটনীতিকদের মধ্যে। কর দেওয়া নিয়ে শিথিল নিয়মের জন্য পরিচিত বাহামা, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডসের মতো নানা মুলুক। সেই সব জায়গায় বিভিন্ন দেশের রাজনীতিক, ফুটবলার, চিত্রতারকাদের লগ্নির খবর রয়েছে পানামার ওই আইনজীবী সংস্থার নথিতে। প্রশ্ন উঠেছে কর ফাঁকি দিতে তাঁরা আইন ভেঙে ওই মুলুকে লগ্নি করেছিলেন
কি না। এই বিতর্কের জেরে আজ ইস্তফা দিয়েছেন আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিগমান্দুর ডেভিড গানলাউগসন। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে কমিশন গড়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। ভারতীয় নামগুলি নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
তবে পানামা নথিতে ইকবাল মির্চির প্রসঙ্গ ওঠায় নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ১৯৯৪ সালে লন্ডনবাসী মির্চিকে আটক করে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কারণ, তার বিরুদ্ধে দাউদ-সাম্রাজ্যের আর্থিক লেনদেন সামলানোর অভিযোগ এনেছিল দিল্লি। জারি হয়েছিল ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিসও। ভারতে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালাতে চালাতেই ২০১৩ সালে ৬৩ বছর বয়সে মারা যায় মির্চি।
পানামা নথি অনুযায়ী, মির্চির সংস্থা ‘কান্ট্রি প্রপার্টিজ’ ও ‘ডেটস ফাউন্ডেশন’ নামে দু’টি সংস্থার মাধ্যমে বেশ কিছু সম্পত্তি হাতে রেখেছে তারা। ‘কান্ট্রি প্রপার্টিজ’-এর মাধ্যমে মির্চির তুরস্ক, মরক্কোর মতো দেশে সম্পত্তি কেনার কথা আগেই জেনেছিল দিল্লি।