প্রতীকী ছবি।
এক দলিত মহিলাকে ধর্ষণের পর খুন করে তাঁর দেহ কেটে টুকরো টুকরো করল দুষ্কৃতীরা। ভয়ানক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের বান্দায়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম রাজকুমার শুক্ল। এই ঘটনায় রাজকুমারের সঙ্গে আরও দু’জন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর থেকেই পলাতক তিন জনেই। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
গিরওয়ানের তদন্তকারী আধিকারিক সন্দীপ তিওয়ারি জানিয়েছেন, শুক্লর একটি আটাকল রয়েছে। সেই আটাকল পরিষ্কারের কাজ করতেন মহিলা। মঙ্গলবার তিনি সেখানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। মহিলার কন্যার দাবি, তিনি যখন শুক্লের আটাকলে পৌঁছন, তখন একটি ঘরের ভিতর থেকে মায়ের চিৎকারের আওয়াজ শুনতে পান। সেই আওয়াজ শুনে ঘরের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। দরজা খুলতেই দেখেন রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। মায়ের দেহ টুকরো টুকরো করে কাটা।
এই দৃশ্য দেখে মহিলার কন্যা চিৎকার করে আশপাশের লোকজন জড়ো করেন। স্থানীয়রা এসে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মহিলাকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এই ঘটনায় রাজকুমার এবং তাঁর দুই ভাই বাউয়া এবং রামকৃষ্ণের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুন-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এই খুন এবং ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, “বান্দায় এক দলিত মহিলাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মহিলারা আতঙ্কিত এবং একই সঙ্গে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভও বাড়ছে।” অখিলেশ এই ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে গিয়ে বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির এক আইআইটি ছাত্রীর শ্লীলতাহানি এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে চুম্বনের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। বুধবার রাতে তিন অজ্ঞাতপরিচয় যুবক প্রথমে ওই পড়ুয়ার শ্লীলতাহানি করেন এবং জোর করে চুম্বন করেন। পরে ওই পড়ুয়াকে বিবস্ত্র করে ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের অভিযোগও উঠেছে। ওই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অখিলেশ বলেন, “বিজেপি সরকারের উপর সম্পূর্ণ আস্থা হারিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মহিলারা। এই সরকারের কাছ থেকে কোনও কিছু আশা করাই অর্থহীন।”
সর্বভারতীয় তৃণমূলের তরফে এক্স (সাবেক টুইটার) করে দলিত মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, “বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ ধর্ষণকারীদের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠেছে। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে মহিলাদের প্রতি অত্যাচার রোজকার ঘটনা হয়ে গিয়েছে।” একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে সেই এক্স (সাবেক টুইটার) ট্যাগ করে প্রশ্ন করা হয়েছে, রাজ্যের কোনও প্রান্তেই কি মহিলারা সুরক্ষিত এবং নিরাপদে থাকতে পারবেন না? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও ওই এক্সে ট্যাগ করে বলা হয়েছে, বিজেপির শাসনে মহিলাদের নিরাপত্তার কি কোনও গুরুত্ব নেই?