—ফাইল চিত্র।
বিহার ও দিল্লির সংবাদপত্রে পাতা জোড়া একটি নির্দোষ বিজ্ঞাপন। যাতে বিহার ও বিহারের স্বার্থে রামবিলাস পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি সর্বদা তৎপর রয়েছে বলে ঘটা করে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু নির্দোষ সেই বিজ্ঞাপনই রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করেছে বিহারের রাজ্য-রাজনীতিতে। রাজনীতির অনেকেই একে মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমারের উদ্দেশে পাসোয়ান পরিবারের সরাসরি আক্রমণ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন। মূলত বিহারের দলিত ভোট কার সঙ্গে রয়েছে, তা নিয়েই এই লড়াই বলে মত রাজনীতিকদের।
নির্বাচন কমিশন আজই জানিয়েছে বিহারে নভেম্বরের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন সেরে ফেলা হবে। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কমিশন। আজ ওই বিজ্ঞাপন আসতেই জল্পনা শুরু হয়ে যায় বিহারের রাজনীতিতে। ‘বিহার প্রথম, বিহারি প্রথম’ সংক্রান্ত ওই বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘ওরা আমাদের উপরে রাজত্ব করার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে, সেখানে আমরা লড়ছি বিহারের গৌরব ফিরিয়ে আনতে।’ অনেকেরই মতে, ওই বিজ্ঞাপনের পিছনে আসলে রয়েছে বিহারের দলিত রাজনীতি। সম্প্রতি বিহারের এনডিএ জোটে যোগ দেন সে রাজ্যের দলিত নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝি। মূলত বিহারের দলিত ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই দলিত নেতাকে এনডিএ শিবিরে নিয়ে এসেছেন নীতীশ।
এতেই চটেছেন রামবিলাস ও পুত্র চিরাগ পাসোয়ান। বিহারের জাতপাতের রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় ধরেই দলিত মুখ হলেন রামবিলাস। দলিত ভোটই তাঁর শক্তি। ছেলে চিরাগকে এই বিধানসভা নির্বাচনেই দলিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান রামবিলাস। সেই বাড়া ভাতে ছাই দিতেই জিতনরামকে সামনে রেখে এখন পাসোয়ানদের দলিত ভোটে ভাঙন ধরাতে চাইছে জেডিইউ। এলজেপি নেতাদের ক্ষোভ, দলিত ভোট যাতে পাসোয়ান পরিবারের ঝুলিতে না-যায় তাই জিতনরামকে খাড়া করা হচ্ছে। প্রকাশ্যে এলজেপি মুখপাত্র আশরফ আনসারি বলেছেন, ‘‘এই বিজ্ঞাপন কারও বিরুদ্ধে নয়। চিরাগ পাসোয়ান গোড়া থেকেই বলে আসছেন, বিহার প্রথম ও বিহারি প্রথম।”
অনেকেই মনে করছেন আসন বন্টনের প্রশ্নেও রামবিলাস যাতে দুর্বল অবস্থানে থাকেন, সে কারণেই ভোটের মুখে জিতনকে এনেছে এনডিএ। জেডিইউ-এর এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে নীতীশ এনডিএ-তে ছিলেন না। লালুপ্রসাদ ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়েছিলেন। ফলে সে সময়ে এলজেপি যে ক’টি আসন বিজেপির কাছে চেয়েছিল, তা পেয়ে গিয়েছিল। নীতীশ এ বার খুব বেশি হলে ১৫-২০টির বেশি আসন ছাড়তে চাইবেন না।’’ ফলে আসন বণ্টন নিয়ে ঝামেলা যে আসন্ন, সে বিষয়ে নিশ্চিত জেডিইউ-এলজেপি দুই শিবিরই।