চেনে না কেউ, তাই পছন্দ কোবিন্দ

মোদীর বাছাই করা প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে মোহন ভাগবতের কিছু বলার নেই। তা ছাড়া, আরএসএস-এর দর্শনও বলে দলিতদের অন্তর্ভুক্ত করে অখণ্ড হিন্দু সমাজ গঠন করা আশু প্রয়োজন। ফলে এই মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন ভাগবত। কিন্তু আরএসএস সূত্রই স্বীকার করছে, কোবিন্দের নাম তারা বাছেনি। তাদের পছন্দের অন্য বেশ কয়েক জন প্রার্থী ছিলেন।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৭ ০৩:৩৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

উত্তরপ্রদেশে যে ভুল করেছিলেন, রাইসিনা হিলসের ক্ষেত্রে সেটি আর করলেন না নরেন্দ্র মোদী। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পদে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিন্‌হাকে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে হয়েছিল আরএসএস-এর পছন্দের প্রার্থী যোদী আদিত্যনাথকে। রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থীর নাম তাই আগাগোড়া আস্তিনের তলায় লুকিয়ে রেখেছিলেন মোদী। সম্ভবত অমিত শাহ ছাড়া আর কেউ তার আঁচ পাননি!

Advertisement

মোদীর বাছাই করা প্রার্থী রামনাথ কোবিন্দ সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে মোহন ভাগবতের কিছু বলার নেই। তা ছাড়া, আরএসএস-এর দর্শনও বলে দলিতদের অন্তর্ভুক্ত করে অখণ্ড হিন্দু সমাজ গঠন করা আশু প্রয়োজন। ফলে এই মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়েছেন ভাগবত। কিন্তু আরএসএস সূত্রই স্বীকার করছে, কোবিন্দের নাম তারা বাছেনি। তাদের পছন্দের অন্য বেশ কয়েক জন প্রার্থী ছিলেন।

আরও পড়ুন: এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দলিত নেতা রামনাথ কোবিন্দ

Advertisement

প্রশ্ন, কোবিন্দ কেন? বিজেপির এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘ওঁকে কেউ চেনেন না। বিহারের রাজ্যপাল হয়েও তিনি আন্ডারস্টেটেড চরিত্র। সেটাই তাঁর মনোনয়নের নেপথ্যশক্তি।’’ সনিয়া গাঁধী যখন প্রতিভা পাটিলকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করেন তখন তাঁর সবচেয়ে বড় যোগ্যতা ছিল, আনুগত্য। মোদীও এক জন প্রতিভা পাটিল খুঁজছিলেন এবং পেয়েও গেলেন। বলছেন বিজেপি নেতারাই।

রাষ্ট্রপতি পদে এনডিএ প্রার্থী নিয়ে যাঁদের নাম আলোচনা হচ্ছিল তাঁদের মধ্যে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল রাম নায়েক, গুজরাতের রাজ্যপাল ওমপ্রকাশ কোহলি যেমন ছিলেন, তেমনই ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বেঙ্কাইয়া নায়ডু, থাওয়ারচাঁদ গহলৌত। কিন্তু সমস্যা হলো, এঁরা সবাই স্বাধীনচেতা। সুষমা, বেঙ্কাইয়া তো জাতীয় স্তরের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। কিন্তু কোবিন্দের নিজস্ব পরিচিতি নেই। আত্মপ্রচারের ‘ব্যামো’ও নেই। বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘‘কোবিন্দ প্রায় দু’বছর দলের জাতীয় মুখপাত্র ছিলেন। সাংবাদিক বৈঠক করেছিলেন কুল্লে তিন বার।’’ ফলে কোবিন্দকে প্রার্থী করে এক দিকে যেমন দলিতদের বার্তা দিতে পারবেন মোদী, তেমনই নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন রাইসিনা হিলস সম্পর্কে।

সংবিধান মোতাবেক রাষ্ট্রপতি জাঁকজমক পূর্ণ সাক্ষীগোপাল হলেও রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার জেরে লক্ষ্মণরেখা ডিঙিয়ে যাওয়ার নজির কম নয়। জ্ঞানী জৈল সিংহ তো রাষ্ট্রপতি ভবন থেকেই রাজীব গাঁধীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তেমন সম্ভাবনা অঙ্কুরেই বিনাশ করে ‘ইয়েস প্রাইম মিনিস্টার’ মডেল চালু করলেন মোদী— বলছেন বিজেপি নেতারা।

এক সপ্তাহ আগেই ফাঁসি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পাঠানো ফাইল ফেরত পাঠিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কোবিন্দের জমানায় ফাইল ফিরবে না বলেই আশা প্রধানমন্ত্রীর দফতরের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement