ছবি-পেমা খান্ডুর সৌজন্যে
মানুষের অতিরিক্ত লোভই পরিবেশের বিপদ ডেকে আনছে। ধ্বংস করছে বাস্তুতন্ত্র। গত কাল ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আধুনিক শিক্ষায় নৈতিকতা সম্পর্কে ভাষণে এ কথা বলেন চতুর্দশ দলাই লামা। তিনি জানান, ভারতের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ইংরেজদের হাতেগড়া। সেখানে মানবিক মূল্যবোধ কমই শেখানো হয়। জাগতিক লাভের কথাই বেশি শিখছে ছাত্রছাত্রীরা। তাই প্রাচীন ভারতীয় আদর্শ ও মূল্যবোধ ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তিতে শিক্ষণ কাঠামো ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। মানুষকে লোভ কমিয়ে পরিবেশের উপরে, মূল্যবোধ তৈরিতে বেশি মন দিতে হবে। মানুষের লোভের ফলেই বিশ্বে উষ্ণায়ণ বাড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে নদনদীর উপরে। কমে যাচ্ছে ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর। ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তরে, ১৯৫৯ সালের মার্চে তাঁর তাওয়াং থেকে তেজপুরের সফরকে অত্যন্ত বেদনার ইতিহাস বসে বর্ণনা করেন দলাই লামা। তুলে ধরেন তিব্বতের উপরে চিনা আগ্রাসনের কথা। বলেন, “ভারতে এসেই প্রথম আমি সত্যিকারের স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছিলাম। ভারতের সাহায্যেই তিব্বতের সুপ্রাচীন জ্ঞান ও ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি। বিশ শতক অনেক হিংসা দেখেছে। একবিংশ শতককে শান্তির শতাব্দী করার দায়িত্ব নতুন প্রজন্মকে নিতে হবে।”
আরও পড়ুন
কৃত্রিম বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করবেন না: এ বার চিনকে পাল্টা হুঁশিয়ারি ভারতের
আজ দলাই লামার হেলিকপ্টারে লুম লা যাওয়ার কথা ছিল। সেখানকার তারা মন্দিরের উপাসনায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেখান থেকে যাওয়ার কথা ছিল তাওয়াংয়ে। কিন্তু গুয়াহাটিতে মন্দ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারে বৌদ্ধ ধর্মগুরুকে পাঠানোর ঝুঁকি নেয়নি সরকার। এর আগে, ২০১১ সালে, মন্দ আবহাওয়ায় তাওয়াংয়ে কপ্টার ভেঙে মারা গিয়েছিলেন তদনীন্তন মুখ্যমন্ত্রী দোর্জি খান্ডু ও তাঁর তিন সঙ্গী। তিনি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর বাবা। ওই বছরই তাওয়াংয়ে যাত্রিবাহী হেলিকপ্টার ভেঙে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এর পর বছর চারেক তাওয়াংয়ে কপ্টার পরিষেবারও বন্ধ ছিল।
প্রায় ৯ ঘণ্টা সড়ক পথে যাত্রা করে এ দিন বিকেলে গুয়াহাটি থেকে বমডিলা পৌঁছান দলাই লামা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু ও অন্যান্য মন্ত্রীরা তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। পরে থুবচং গাৎসেল লিং মঠে প্রার্থনায় অংশ নেন দলাই লামা ও মুখ্যমন্ত্রী। ৮-১০ এপ্রিল তাওয়াংয়ে ধর্মোৎসবে অংশ নেবেন তিনি।