Labourer

আত্মহত্যায় শীর্ষে দিনমজুর, তার পরেই কৃষিক্ষেত্র

কৃষি ক্ষেত্রে আত্মহত্যায় শীর্ষ রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

আগামী দু’বছরের মধ্যে যেখানে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার, সেখানে কৃষি ক্ষেত্রে গত এক বছরে আত্মহত্যা করেছেন ১০,২৮১ জন। যা গত এক বছরে দেশের মোট আত্মহত্যার পরিসংখ্যানের ৭.৪ শতাংশ।

Advertisement

আজ জাতীয় ক্রাইম রেকর্ডস বুরো ২০১৯ সালের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। তাতে দেখা গিয়েছে, কৃষি ক্ষেত্রে আত্মহত্যায় শীর্ষ রয়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও অন্ধ্রপ্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে ছবিটি কী, তা জানার অবশ্য উপায় নেই। কারণ গত বারের মতো এ বারও কৃষি ক্ষেত্রে কত জন রাজ্যে আত্মহত্যা করেছেন, সেই তথ্য কেন্দ্রকে পাঠায়নি নবান্ন।

কৃষি ক্ষেত্রে মোট আত্মঘাতীর মধ্যে চাষির সংখ্যা ৫,৯৫৭ জন। যার মধ্যে ৫৫৬৩ জন পুরুষ। বাকি ৪,৩২৪ জন হলেন খেতমজুর। এদের মধ্যে পুরুষ ৩৭৪৯ জন। তবে কৃষি ক্ষেত্রে আত্মহত্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছে আত্মঘাতী দিনমজুরের সংখ্যা। গত এক বছরে দেশে ৩২,৫৬৩ জন দিনমজুর আত্মহত্যা করেছেন। পেশাগত দিক থেকে বিচার করলে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছেন তাঁরাই (২৩.৪ শতাংশ)।

Advertisement

আরও পড়ুন: লাদাখে এলাকা দখল ঘিরে জল্পনা, সেনা-সজ্জায় বদল, পাল্টা তৎপর চিনও​

মূলত পেশার অনিশ্চয়তা থেকে মানসিক অবসাদই এঁদের আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেই মনে করছেন সোনিপথের ওপি জিন্দাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এ দেশে কৃষক ও মজদুর দু’টি গোষ্ঠীরই আয় অনেকাংশে অনিশ্চিত। সেই অনিশ্চয়তা এঁদের ঠেলে দিচ্ছে আত্মহত্যার দিকে। নোটবন্দিতে নগদের জোগান কমে যাওয়ায় অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। এ বছর লকডাউনের ফলে, অবস্থা এর চেয়েও খারাপ হতে পারে পরের বছর।’’ সব মিলিয়ে দেশে গত এক বছরে যে ১,৩৯,১২৩ জন আত্মহত্যা করেছেন, তাঁদের মধ্যে ৪২,৪৮০ জন হয় কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত, নয় দিনমজুর।

আজ এই পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে মোদী সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সরকারের ভ্রান্ত অর্থনীতির কারণে গত এক বছরে ৪২ হাজারের কাছাকাছি কৃষক ও দিনমজুর মারা গিয়েছেন। সরকার কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে অথচ ফি বছর কৃষকদের আত্মহত্যার সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নীরব।’’

আরও পড়ুন: কাফিলের মুক্তির পিছনে নাছোড় মা

সামগ্রিক ভাবে অবশ্য আত্মহত্যার প্রবণতা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, পারিবারিক সমস্যার কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিচ্ছেন। প্রায় ৩২.৪ শতাংশ মানুষ পারিবারিক কারণে আচমকা জীবনে দাঁড়ি টেনে দিচ্ছেন। শারীরিক অসুস্থতার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করছেন প্রায় ১৭.১ শতাংশ মানুষ। সেখানে বেকারত্বের কারণে ২ শতাংশ, হৃদয়ঘটিত কারণে ৪.৫ শতাংশ ও বিয়ে সংক্রান্ত

ঝামেলার কারণে ৫.৫ শতাংশ মানুষ আত্মহত্যা করছেন। বয়সের দিক বিচার করলে ৩০-৪৫ বছর বয়সি ব্যক্তিদেরই আত্মহত্যার (৩৩,৫১৮ জন) ঝোঁক বেশি। পিছিয়ে নেই ১৮-৩০ বছর বয়সিরাও। গত এক বছরে গোটা দেশে ওই বয়ঃসীমার মধ্যের প্রায় ৩০,৮৮৩ জন আত্মহত্যা করেছেন।

বড় শহরগুলির মধ্যে আত্মহত্যার হার সবচেয়ে বেশি চেন্নাইয়ে। তার পরে দিল্লি, বেঙ্গালুরু ও মুম্বই। আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকটাই কম কলকাতায়। চেন্নাইয়ে যেখানে গত বছরে ২৪৬১ জন আত্মহত্যা করেছেন, কলকাতায় সংখ্যাটি ১৮১।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement