দেশ জুড়ে করোনায় দৈনিক সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে দিল্লি ও কর্নাটক। —ফাইল চিত্র
দেশ জুড়ে বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে দৈনিক সংক্রমণ সামান্য কমলেও তা ১৬ হাজারের কাছাকাছি রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য কমে ১৫,৮১৫-এ দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ১৬,৫৬১। রাজ্যভিত্তিক কোভিড পরিস্থিতির দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, দৈনিক সংক্রমণের শীর্ষে রয়েছে দিল্লি ও কর্নাটক। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লি ও কর্নাটকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দু’হাজারের গণ্ডি পার করে যথাক্রমে ২,১৩৬ এবং ২,০৩২-এ পৌঁছেছে। দৈনিক সংক্রমণের তালিকায় এর পর রয়েছে মহারাষ্ট্র (১,৯৭৫), কেরল (১,১২০), উত্তরপ্রদেশ (৯৯৩) ও হরিয়ানা (৯৭৭)।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের দৈনিক সংক্রমণের হার অনেকটাই কমে হল ৪.৩৬ শতাংশ। শুক্রবার দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ৫.৪৪ শতাংশ। যত জন মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হল, তাঁদের মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাকেই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৬৮ জনের। এর মধ্যে কেরলে মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় কেরলে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন ব্যক্তি মারা গিয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ ছাড়া দিল্লিতে ১০ জন, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক ও পঞ্জাবে পাঁচ জন, হরিয়ানা, অসম ও পশ্চিমবঙ্গে তিন জন, ছত্তীসগঢ়, মণিপুর ও চণ্ডীগড়ে দু’জন গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। ওড়িশা, রাজস্থান, মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশে এক জন করে ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শুক্রবার এই সংখ্যা ছিল ৪৯। দেশে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ২৯ হাজার ৫৫৯ জন ব্যক্তি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।
আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বড় জমায়েত থেকে সংক্রমণ মাথাচাড়া দেওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাই আগেভাগেই সমস্ত রাজ্যকে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিডের প্রকোপ থেকে ২০,০১৮ জন ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। দেশ জুড়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ১১২ জন। বর্তমানে সুস্থতার হার ৯৮.৫৪ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত দেশে ২০৭ কোটি ৭১ লক্ষ ৬২ হাজার ৯৮ টিকাকরণ হয়েছে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৮,৮৫৯। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৬,৫৯৪। তার আগের দু’দিন ছিল ৮,৫৮২ এবং ৮,০৮৪। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ৮,৮২২ এবং ১২,২১৩। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৮,৮৫৯, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)