Cyclone Nisarga

আমপান বঙ্গকে ছাড়েনি, নিসর্গ থেকে বাঁচবে গুজরাত?

এখনও পর্যন্ত নিসর্গের যা অভিমুখ, তাতে আজ, বুধবার সে মূলত মহারাষ্ট্র উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০২০ ০৩:৩২
Share:

ঘনিল হে..: আমপান আছড়ে পড়ার আগের বিকেলে। ফাইল চিত্র

আমপানের ধ্বংসচিহ্ন, সেই সংক্রান্ত বিপর্যয় থেকে এখনও বেরোতে পারেনি কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা-সহ একাধিক এলাকা। তার আগেই ফের চোখ রাঙাচ্ছে আর একটি ঘূর্ণিঝড়। তবে এ বার আর বঙ্গোপসাগর নয়, আরব সাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় নিসর্গের ‘ল্যান্ডফল’ কোথায় হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে আবহবিদ মহলে।

Advertisement

প্রাক্ বর্ষা, অর্থাৎ এপ্রিল-মে-জু‌ন মাসে গুজরাত উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার ঘটনা আকছার ঘটে থাকে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিসর্গের যা অভিমুখ, তাতে আজ, বুধবার সে মূলত মহারাষ্ট্র উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে। বাস্তবে তেমন হলে ৯০ বছরে এই নিয়ে চতুর্থ বার প্রাক্-বর্ষা মরসুমে গুজরাতকে বাদ দিয়ে দেশের পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়বে কোনও ঘূর্ণিঝড়।

‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিয়োরোলজি’-র ‘সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ রিসার্চ’-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো বিনীত কুমার ‘ইন্ডিয়া মেটিয়োরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট’-এর (আইএমডি) আর্কাইভের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানাচ্ছেন, ১৯৩২, ১৯৪১ ও ১৯৬১ সালের মে মাস— মাত্র এই তিন বার গুজরাতকে বাদ দিয়ে ভারতের পশ্চিম উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘১৯৩২ ও ১৯৪১ সালের ঘূর্ণিঝড় দু’টি কেরল উপকূলে এবং ১৯৬১ সালের ঘূর্ণিঝড়টি মহারাষ্ট্র উপকূলে আছড়ে পড়েছিল।’’ তবে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের কথায়, ‘‘বর্তমান অভিমুখ অনুযায়ী মহারাষ্ট্র ও গুজরাতের মধ্যবর্তী উপকূলে নিসর্গের ল্যান্ডফল হওয়ার কথা।’’ ঘটনাচক্রে, কলকাতা-সহ একাধিক এলাকায় মঙ্গলবার বৃষ্টি হয়েছে। তবে তার সঙ্গে নিসর্গের কোনও যোগ নেই বলে জানাচ্ছেন অধিকর্তা।

Advertisement

আরও পড়ুন: ১৩৮ বছর পর ঢুকছে ‘নিসর্গ’! সাইক্লোন কেন বিরল মুম্বইয়ে

শেষ পর্যন্ত নিসর্গ যদি মহারাষ্ট্র উপকূলেই আছড়ে পড়ে, তা হলে গত ন’দশকে মাত্র চারটি ঘূর্ণিঝড়ের ‘ল্যান্ডফল’ গুজরাতে হল না কেন, যেখানে সেটাই চিরাচরিত ধারা? সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিনীতের উত্তর, ‘‘এ বিষয়ে গবেষণা চলছে।’’

কেন আছড়ে পড়ার (ল্যান্ডফল) ঠিক আগের মুহূর্তে কোনও ঘূর্ণিঝড় তার অভিমুখ পরিবর্তন করে— সে বিষয়েও চলছে গবেষণা। আবহবিজ্ঞানী সুব্রতকুমার মিদ্যা জানাচ্ছেন, কোন ঘূর্ণিঝড় কোন দিকে যাবে, তা মূলত নির্ভর করে তার ‘স্টিয়ারিং উইন্ড’ বা ‘চালিকা বাতাসশক্তি’র উপরে। কারণ, এই ‘চালিকা-বাতাসশক্তি’ই ঘূর্ণিঝড় বা ঝোড়ো হাওয়াকে টেনে নিয়ে যায়। তাঁর কথায়, ‘‘কিছু কিছু ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার আগে হঠাৎই তার অভিমুখ পাল্টে সম্পূর্ণ অন্য দিকে চলে গিয়েছে। ফলে ল্যান্ডফল নিয়ে পূর্বাভাস পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তবে নিসর্গ এখনও পর্যন্ত তার অভিমুখ পরিবর্তন করেনি। দেখা যাক এখন কী হয়!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement