বিপর্যয়: গুলাবের প্রভাবে বৃষ্টিতে জলমগ্ন বিশাখাপত্তনমের রাস্তা। সোমবার। পিটিআই
গত কাল সন্ধেয় অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনম ও ওড়িশার গোপালপুরের মধ্যে আছড়ে পড়ার পর সাইক্লোন গুলাব এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। ঝড়ের গতি কমে গিয়ে আজ দুপুরের পর থেকে তা অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরভাগ ও ওড়িশার দক্ষিণ অংশে গভীর নিম্নচাপের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ক্রমে সেটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের দিকে সরে যাচ্ছে বলে আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
গত কাল সন্ধে ছ’টা নাগাদ অন্ধ্রের কলিঙ্গপত্তনমের মিডুগুডা ও টোকালি গ্রাম এবং ওড়িশার গোপালপুরে আছড়ে পড়েছিল গুলাব। প্রবল ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে অঝোরে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল ওই দুই রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলে। প্রবল ঝড় ও বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন জায়গায় ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নও রেখেছে গুলাব। গতকাল থেকেই অন্ধ্রের বিভিন্ন জেলায় শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টি। আজ সারাদিন সেই পরিস্থিতি বজায় ছিল। বিশাখাপত্তনমে গত ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টি ৩০ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। সাইক্লোনের প্রভাবে ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৩৩.৩ সেন্টিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। জেলায় প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। বিশাখাপত্তনমে ঝড়ে একটি বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। শ্রীকাকুলাম জেলাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যসচিব আদিত্যনাথ দাস আজ ওই জেলায় গিয়ে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ খতিয়ে দেখেছেন। আবহাওয়া বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগরম, বিশাখাপত্তনম, পূর্ব গোদাবরী, পশ্চিম গোদাবরী ও কৃষ্ণা জেলার অন্তত ৪৫০টি জায়গায় ৬০.৩ থেকে ৩৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ওড়িশার দক্ষিণাংশে গনজাম, গজপতি, কন্ধমাল, রায়গড়া, কোরাপুট, মালকানগিরি জেলাগুলিতে মাঝারি বৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতি ছিল ওড়িশার কেন্দ্রাপড়া, কটক, খুরদা, পুরী, নয়াগড় জেলাগুলিতেও। সাইক্লোনে প্রাণহানি এড়াতে আগে থেকেই ওড়িশার অন্তত ৩৯ হাজার জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ওড়িশার বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পি কে জেনা জানিয়েছেন, গুলাবের প্রভাবে রাজ্যে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি বলেন, গনজাম, গজপতি, রায়গড়া জেলায় বৃষ্টি হলেও ঝড়ের বেগ বেশি ছিল না। পুরীতে জীবনযাত্রা স্বাভাবিকই ছিল।