ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পারাদীপের উপকূলে মেঘলা আকাশ ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি। ছবি: এএফপি
বঙ্গোপসাগরে ঘণীভূত নিম্নচাপটি ক্রমেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে এবং আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে তা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম বা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। আশঙ্কা মৌসম ভবনের। আপাতত ওই নিম্নচাপের অভিমুখ পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর ওড়িশা ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে। অন্য দিকে পূ্র্ব-মধ্য আরব সাগরে ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ বা অতি প্রবল ঝড়ের রূপ নিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’। আরও শক্তি বাড়িয়ে আগামিকাল বৃহস্পতিবার গুজরাতের কচ্ছ উপকূলে দেবভূমি-দ্বারকা জেলায় এবং দিউ এর উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। তার জন্য জারি হয়েছে সতর্কতা।
বঙ্গোপসাগরে যে নিম্নচাপটি সক্রিয়, সেটি বিকেলে গভীর নিম্নচাপ হওয়ার পরে ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদরা। যার নাম আগে থেকেই নির্ধারিত রয়েছে ‘বুলবুল’। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় ওড়িশার জগৎসিংপুর এবং কেন্দ্রাপাড়া ছাড়া বালেশ্বর, ভদ্রক, গঞ্জাম, পুরী, গজপতি, মলকানগিরি, কোরাপুট, রায়গড়, নবরঙপুর, কালাহান্ডি, কন্ধমাল, বৌধ এবং নৌপাড়া— এই ১৫ জেলায় সতর্কতা জারি করেছিল ওড়িশা প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছিল। আগামিকাল ৭ নভেম্বর থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপরেও জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হবে বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
কিন্তু আজ বুধবার সকালে ওড়িশার ত্রাণ কমিশনার প্রদীপ জেনা বলেন, ‘‘মৌসম ভবনের শেষ বুলেটিন অনুযায়ী, ওড়িশা উপকূলে ‘বুলবুল’-এর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে ১৫ জেলার জেলাশাসকদের সতর্ক থাকতে এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের উপর ভরসা রাখা উচিত সাধারণ মানুষের। কারণ সাইক্লোন ‘পিলিন’-এর পর থেকে মৌসম ভবনের বার্তা পর পর সত্যি হয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: সরকার গড়ুক বিজেপি-শিবসেনা, বিরোধী আসনে বসবে এনসিপি-কংগ্রেস: শরদ পওয়ার
অন্য দিকে মৌসম ভবন জানিয়েছে, পূর্ব-মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর আন্দামান সাগরের উপর অবস্থিত ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ৯ কিলোমিটার বেগে পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিমের দিকে সরে যাচ্ছে। সকাল সাড়ে ৮টার বার্তায় বলা হয়েছিল, ওই সেটি ওড়িশার পারাদ্বীপ বন্দর থেকে ৮১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।
অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মহা’র আছড়ে পড়ার আশঙ্কায় গুজরাতের কছ উপকূলে জারি হয়েছে সতর্কতা। সকাল সাড়ে ৮টায় মৌসম ভবনের বার্তায় জানানো হয়েছে, আরব সাগরে পোরবন্দরের পশ্চিম-দক্ষিণ-পশ্চিমে ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় মহা।
আরও পডু়ন: ইয়েদুরাপ্পা দিয়েছিলেন ১০০০ কোটি! দাবি কর্নাটকের ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কের
‘মহা’র জেরে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় জেলা পালঘরে ৬ থেকে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত সমস্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সংলগ্ন ঠাণে জেলার মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের উপকূলে সতর্ক রয়েছে নৌবাহিনী। খাবার, পানীয় জল, ওষুধের মতো ত্রাণসামগ্রী ভর্তি করে দুই রাজ্যের উপকূল এলাকায় সতর্ক রয়েছে ওয়েস্টার্ন ন্যাভাল কমান্ডের চারটি যুদ্ধজাহাজ। এ ছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে অতিরিক্ত হেলিকপ্টার ও উদ্ধারের অন্যান্য সামগ্রী।