বালেশ্বরে সমুদ্রের তীরে দাঁড়িয়ে জলোচ্ছ্বাস দেখছেন সাধারণ মানুষ। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড় আমপানের ঝাপটায় বিধ্বস্ত ওড়িশার উপকূলবর্তী এলাকার একাংশ। পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়ার আগেই ওড়িশার বেশ কয়েকটি জেলা আমপানের দাপটে বিধ্বস্ত। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত জগৎসিংহপুর, কটক, কেন্দ্রাপড়া, জাজপুর, গঞ্জাম, ভদ্রক, বালেশ্বর। সকাল থেকেই উপকূলবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছিল প্রবল বৃষ্টি। বিভিন্ন এলাকায় ভেঙে পড়েছে কাঁচা বাড়ি, উপড়ে গিয়েছে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। তবে অনেক আগে থেকেই সতর্ক হওয়ার জন্য বড় বিপর্যয় এড়ানো গিয়েছে বলে দাবি প্রশাসনের।
ভদ্রকে মৃত্যু হয়েছে তিন মাসের একটি শিশুর। মারা গিয়েছেন ৬৭ বছরের এক মহিলাও। তবে ঝড়ের জেরেই এই দুই মৃত্যু কি না রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি ওড়িশা সরকার। পুরী এবং সংলগ্ন খুরদায় অবশ্য আজ সকালে অল্প বৃষ্টি হয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কতা হিসেবে জগন্নাথ দেবের রথ তৈরির কাজ বন্ধ রাখা হয়েছিল।
স্পেশাল রিলিফ কমিশনার পি কে জেনা জানিয়েছেন, আমপান নিয়ে আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তার পর থেকেই উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়। অন্তত ১ লক্ষ ৪১ হাজার মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয় আশ্রয় শিবিরে। কমিশনারের বক্তব্য, করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের জেরে অনেকেই প্রথমে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় শিবিরে যেতে চাননি। কিন্তু পরে তাঁদের বুঝিয়ে শিবিরে পাঠানো হয়। তার জন্যই প্রচুর মানুষের প্রাণ রক্ষা করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনার।
পরিবার নিয়ে রাজনগর তেহসিলের এক আশ্রয় শিবিরে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দা প্রদ্যোৎ গিরি। তাঁর অভিযোগ, আশ্রয় শিবিরগুলিতে ভিড়ে উপচে পড়ছে। পারস্পরিক দূরত্ববিধি মানা হচ্ছে না।
আমপানের ঝাপটায় প্রাণহানি কম হলেও ফসল ও ঘরবাড়ির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু জেলায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে পানের বরজ। আগামিকাল সকালের আগে পুরো পরিস্থিতি জানা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
গত কাল মাঝ রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ১৯৯৯-এর সুপার সাইক্লোনে বিধ্বস্ত পারাদ্বীপেও। আগামিকাল পর্যন্ত সেখানে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।