প্রতীকী ছবি।
গুগলে খুঁজলে কী না মেলে! প্রাইভেট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেরও হদিস দিচ্ছে গুগল। যার জেরে যে কেউ এই সব গ্রুপে ঢুকে পড়ে, তার সদস্যদের নামধাম, নম্বর, ছবি, মায় যে যা গোপন বার্তা শেয়ার করেছেন, তার সবই হাতিয়ে নিতে পারে। এমনটাই দাবি করেছেন সাইবার-সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ রাজশেখর রাজারিয়া। এক টুইটে গত কাল তিনি লিখছেন, “যতটা ভাবেন, ততটা সুরক্ষিত নয় আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। কারণ, এই অ্যাপে গ্রুপ চ্যাটের ইনভাইট লিঙ্কগুলি ও ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল ফের প্রকাশ করে দিচ্ছে গুগল।” বিষয়টি খতিয়ে দেখে একাধিক পোর্টালের বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অভিযোগটি খাঁটি।
বসে নেই হোয়াটসঅ্যাপ। তারা জানিয়েছে, ব্যপারটা হচ্ছিল বটে, তবে সমস্যাটি তারা ধরে ফেলেছে। এবং সামলেও ফেলেছে। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে আমন্ত্রণের বা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য লিঙ্কে তারা ‘নোইনডেক্স ট্যাগ’ জুড়ে দিচ্ছে। রাজশেখরের মতে, ‘নোইনডেক্স ট্যাগ’ আদৌ স্থায়ী কোনও সমাধান নয়। কয়েক মাস পরেই গুগল সার্চে ফের উঠে আসতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলির সুলুকসন্ধান। ২০১৯ সালেও এমনটা ঘটতে দেখা গিয়েছিল। ২০২০-র ফেব্রুয়ারিতে ফের সামনে আসে একই সমস্যা। দু’বারই হোয়াটসঅ্যাপ দাবি করে, সমস্যা মিটিয়ে ফেলেছে তারা। ২০২০-র মার্চেও তারা জানিয়েছিল, লিঙ্কের সঙ্গে ‘নোইনডেক্স ট্যাগ’ জুড়ে তারা সমস্যাটি মিটিয়ে ফেলেছে। ২০২১-এর গোড়াতেও একই দাবি করল তারা। ফলে রাজশেখরের বক্তব্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন সাইবার-বিশেষজ্ঞরা।
হোয়াটসঅ্যাপের মতে দ্বিতীয় সমাধানটি হচ্ছে, নজরদারি। গ্রুপ পরিচালনা যাঁরা করেন, অর্থাৎ গ্রুপ অ্যডমিনরা এমন অনধিকার প্রবেশকারী দেখলেই সেই নম্বর দল থেকে বাদ দিয়ে দিতে পারেন। যদিও এটা সকলেরই জানা, অ্যাডমিন সেই ঝাড়াইবাছাই করে ওঠার আগেই অনুপ্রবেশকারীটি তার কাজ হাসিল করে সরে পড়তে পারে। ফলে দ্বিতীয় পথটি যে আদৌ বাস্তবসম্মত কোনও সমাধান নয়, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, নয়া স্ট্রেনই চিন্তার
আরও পড়ুন: কর্নাটকে গাড়ি দুর্ঘটনায় সঙ্কটজনক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীপাদ নাইক, মৃত স্ত্রী এবং সচিব
গুগল বা কোনও সার্চ ইঞ্জিন যে এক ক্লিকে কোনও কিছু সম্পর্কে এত এত ওয়েব পাতার লিঙ্ক হাজির করে, সে সব তারা পায় কোথা থেকে? পায় হামাগুড়ি দিয়ে। সাইবার দুনিয়ায় কোনও পাতা তৈরি হওয়া মানেই তার একটি ঠিকানা বা লিঙ্ক তৈরি হয়। সার্চ ইঞ্জিনগুলি নিরন্তর এই সব লিঙ্ক হাতড়ে বেড়ায়, যাকে বলা হয় ক্রলিং। এ বার সেই সব পাতার বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করে তারা। সেই সঙ্গে তৈরি করতে থাকে পাতাগুলির ইনডেক্স বা সূচি। ফলে কোনও একটি বা একাধিক শব্দ ধরে খুঁজলেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের একগুচ্ছ পাতা তারা হাজির করতে সক্ষম হয়।
কিন্তু সব ওয়েবসাইট বা অ্যাপ চায় না, তাদের বিশেষ কিছু পাতায় নজর বোলাক সার্চ ইঞ্জিন। সেই অনুযায়ী, ‘এই পাতা অনুসরণ কোরো না’ এমন একটি বার্তা দেওয়া থাকে পাতায় ও তার লিঙ্কে। হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, তাদের লিঙ্কে ‘নোইনডেক্স ট্যাগ’ থাকলে সেই লিঙ্ক তাদের সূচিতে না-রাখতে রাজি হয়েছে গুগল। কিন্তু এ জাতীয় প্রতিশ্রুতিতে যে সমস্যার অন্ত ঘটানো সম্ভব নয়, আগেও সেটা দেখা গিয়েছে। রাজশেখরের তাই বক্তব্য, “নোইনডেক্স ট্যাগ আদৌ যথাযথ সমাধান নয়। হোয়াটসঅ্যাপের মতো বড় প্রযুক্তি সংস্থা যদি সত্যিই তার গ্রাহকদের প্রতি যত্নশীল হয়, তবে অবশ্যই তারা এর প্রকৃত সমাধানটি খুঁজে বার করে তা কাজে লাগাবে।”